২৭ অক্টোবর ২০১৭ তারিখে অনুষ্ঠিত জরুরী সভার কার্যবিবরণী।

 

শারদাঞ্জলি ফোরাম

অস্থায়ী প্রধান কার্যালয়, মল্লিক টাওয়ার, ৮ম তলা, ঢাকা

pixlr_20171030161811542

বিষয় ঃ অক্টোবর ২৭, ২০১৭ তারিখে অনুষ্ঠিত জরুরী সভার কার্যবিবরণী।

 

গত জুলাই ১৪, ২০১৭ তারিখ শুক্রবার সকাল ১১.০০ ঘটিকায় শারদাঞ্জলি ফোরাম-এর অস্থায়ী কার্যালয় দিকদর্শন প্রকাশনী লিঃ, মল্লিক টাওয়ার(৮ম তলা), চিত্তরঞ্জন এভিনিউ, ঢাকা-১০০০ অফিসে শারদাঞ্জলি ফোরাম কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি এবং কেন্দ্রীয় স্টিয়ারিং কমিটির এক জরুরী সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সভায় সভাপতিত্ব করেন কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সম্মানিত সভাপতি শ্রী বাবুল চন্দ্র পাল। এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কমিটির সম্মানিত উপদেস্টা শ্রী অরুন চন্দ্র মজুমদার, কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি এবং ঢাকা মহানগর কমিটির সভাপতি শ্রী রতন চন্দ্র পাল, কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি শ্রী অজিত রায়, নির্বাহী সারথি শ্রী দিলীপ কুমার সাহা এবং নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি শ্রী আশীষ কুমার দাশ। নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সভায় এসেছিলেন। কিন্তু তাঁর নিকট আÍীয়ের আকস্মিক মৃত্যু সংবাদ পেয়ে তিনি কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতির সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করে সভা ত্যাগ করেন। এছাড়া কুমিল্লা মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক শ্রী পিংকু চন্দ্র, হবিগঞ্জ জেলা কমিটির সহ-সভাপতি শ্রী সুজিত পাল, ময়মনসিংহ জেলা কমিটির সহ-সভাপতি শ্রী যতন দেবনাথ, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শ্রী নিশিকান্ত তালুকদার, চট্টগ্রাম থেকে কেন্দ্রীয় কমিটির তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক শ্রী সত্যজিৎ চৌধুরী, গোপালগঞ্জ আহ্বায়ক কমিটির প্রধান আহ্বায়ক শ্রী শান্ত সরকার সহ কেন্দ্রীয় কমিটি, ঢাকা মহানগর কমিটির সারথিরা উপস্থিত ছিলেন। সভায় সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করেন শারদাঞ্জলি ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতির মুখপাত্র এবং যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শ্রী পলাশ চন্দ্র নাথ।

 

সভাপতি এবং বিশেষ অতিথিদের আসন গ্রহণের পর সভার প্রারম্ভে হবিগঞ্জ জেলা কমিটির সহ-সভাপতি শ্রী সুজিত পাল শ্রীম˜ভগবদগীতা থেকে শ্লোক পাঠ করেন। এরপর সঞ্চালক শ্রী পলাশ নাথ উপস্থিতিত সকল সারথিকে স্বাগতঃ জানিয়ে আজকের জরুরী সভার কার্যপ্রণালিসমূহ উত্থাপন করেন। তারই ধারাবাহিকতায় কার্যপ্রণালিসমূহ নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয় এবং কার্যপ্রণালির আলোকে আলোচনা শেষে নিুোক্ত সিদ্ধান্তসমূহ গৃহীত হয় ঃ

 

১.০ রংপুর জেলা কমিটির সারথি নিমাই চন্দ্র রায়-এর অকাল মৃত্যুতে কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে শোক জ্ঞাপন।

 

শারদাঞ্জলি ফোরাম রংপুর জেলা কমিটির তরুণ সারথি নিমাই চন্দ্র রায় সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ৬ অক্টোবর, ২০১৭ ইং ইহলোক ত্যাগ করেন। আজকের সভায় শারদাঞ্জলি ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে তার অকাল প্রয়াণে শোক জ্ঞাপন করা হয় এবং তার আÍার শান্তি কামনা করে সভায় উপস্থিত সারথিগণ দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করেন।

 

২.০ গত জুলাই ১৪, ২০১৭ তারিখে অনুষ্ঠিত সভার কার্যবিরণী নিয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণঃ

 

গত জুলাই ১৪, ২০১৭ তারিখে অনুষ্ঠিত সভায় নেয়া সিদ্ধান্তসমূহের কার্যবিবরণীর শ্রী পলাশ নাথ অদ্যকার সভায় পাঠ করে শোনান এবং উপস্থিত সারথিদের সর্বসম্মত সিন্ধান্ত মোতাবেক গত সভার কার্যবিবরণী অনুমোদিত হয়।

 

এরপর আজকের সভার আলোচ্য বিষয়সমূহের মধ্যে গঠনতন্ত্রে বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক, গঠনতন্ত্রে সদস্য শব্দ বাদ দিয়ে সারথি শব্দ সংযোজন, প্রত্যেক জেলা এবং মহানগর কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকগণ যাতে কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সারথি হিসেবে গণ্য হন- এব্যাপারে উপস্থিত সারথিদের মতমত সহ আগামী প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী, নতুন কমিটি গঠন, গীতা শিক্ষা ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে বক্তব্য প্রদানের অনুরোধ জানান। এপ্রেক্ষিতে উপস্থিত সারথিগণের মধ্য থেকে নিুোক্ত সারথিগণ তাদের বক্তব্য এবং মতামত প্রদান করেন।

 

প্রথমেই শারদাঞ্জলি ফোরাম কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শ্রী সঞ্জয় ভৌমিক বক্তব্য প্রদান করেন। তিনি তার বক্তব্যে ৭ বিভাগের জন্য বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক পদ গঠনতন্ত্রে সংযোজনের ব্যাপারে একমত পোষণ করেন। কেন্দ্রীয় কমিটির ত্রিবার্ষিক সম্মেলন যাতে সফল হয়, এব্যাপারে একটি শক্তিশালী প্রস্তুতি কমিটি গঠন সহ নতুন কমিটি গঠনের লক্ষো অভিজ্ঞ সারথিদের নিয়ে একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠনের সুপারিশ করে আজকের সভা যাতে সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে সম্মন্ন হয় এব্যাপারে উপস্থিত সারথিদের সহযোগিতা কামনা করেন।

 

এরপর হবিগঞ্জ জেলা কমিটির সহ-সভাপতি শ্রী সুজিত পাল বক্তব্য প্রদান করেন। তিনি বলেন যে, নতুন করে গীতা গ্রন্থ না-ছাপানোতে তার নিজ জেলার গীতা শিক্ষা কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে। নতুন করে গীতা নিকেতন প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হচ্ছে না। তিনি কেন্দ্র থেকে দ্রুত গীতা উপকরণ পাঠানোর ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেন। তিনি অভিযোগ করেন যে, কেন্দ্র থেকে গীতা শিক্ষা সহ সার্বিক কর্মকাণ্ড যথাযথভাবে পরিচালিত হচ্ছে কিনা এব্যাপারে কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি শ্রী বাবুল পাল, শ্রী সুমন বর্মন, শ্রী রূমন দাস ছাড়া আর কেউ খোঁজ রাখেন না। এজন্য তিনি প্রতিটি বিভাগে সাংগঠনিক পদ সৃষ্টির এব্যাপারে একমত পোষণ করেন। কমিটিতে নারী সারথিদের আরো সম্পৃক্ত করার সুপারিশ করেন। যারা গীতা শিক্ষা দিচ্ছেন, তাদের যথাযথ মূল্যায়ন করে তাদের জন্য কেন্দ্রীয়ভাবে ক্রেস্ট সহ সদনপত্র প্রদানের ব্যবস্থা রাখার সুপারিশ করেন। একই সাথে দক্ষ সংগঠকদেরও যথাযথ সম্মাননা দেয়ার সুপারিশ করেন। কেন্দ্রীয় কমিটিতে তৃণমূল পর্যায়ের পরীক্ষিত সারথিদের অন্তর্ভূূক্ত করার অনুরোধ করেন। আগামী ত্রিবার্ষিক সম্মেলন ঢাকাতে করা, বাহিরের অতিথি কমিয়ে তৃণমূল সারথিদের আমন্ত্রণ করা এবং আয়োজনে ক্রটি-বিচ্যুতি যাতে কম হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখার অনুরোধ জানান। এছাড়া তিনি জেলা এবং মহানগর কমিটি গঠনের সময় কেন্দ্র থেকে প্রতিনিধি পাঠানো অনুরোধ জানান। জেলা ও মহানগর কমিটির পাশাপাশি ছোট আকারে বিভাগীয় কমিটি গঠনেরও সুপারিশ করেন। গীতা নিকেতনগুলো যথাযথভাবে মনিটরিং করার জন্য কেন্দ্র থেকে কোন ব্যবস্থা নাই। এটা করতে হবে। গীতা নিকেতনের সঠিক তথ্য কেন্দ্র থেকে সংরক্ষণ করতে হবে। এজন্য একটি সুষ্ঠ নীতিমালা প্রণয়ন করা প্রয়োজন। ফেসবুকে ফোরামের প্রচারণা একটি শক্তিশালী মাধ্যমে- তাই প্রতিদিন গীতা নিকেতনের ক্লাস চলাকালীন ছবিসহ ফেসবুকে পোষ্ট দেয়ার অনুরোধ করেন। এছাড়া তিনি সারথিদের ফোমরাকে এগিয়ে নিয়ে যাবার স্বার্থে ছোটখাট মনোমালিন্য পরিহার করে একসাথে কাজ করার অনুরোধ জানান।

 

শ্রী সুজিত পালের বক্তব্যের পর ময়মনসিংহ জেলা কমিটির সহ-সভাপতি শ্রী যতন দেবনাথ বক্তব্য প্রদান করেন। তিনি বলেন যে, প্রকৃত ধর্ম শিক্ষার অভাবে সনাতনী সম্প্রদায় অনেক পিছিয়ে আছে। শারদাঞ্জলি ফোরাম গীতা শিক্ষার মাধ্যমে সনাতনীদের মাঝে ধর্ম শিক্ষা বিশাল অবদান রাখছে। তিনি মনে করেন যে, মন্দির প্রতিষ্ঠার চেয়ে ধর্মশিক্ষা অনেক বেশী কার্যকর এবং গুরুত্বপূর্ণ। গীতা শুধু একটি ধর্মগ্রন্থ নয়, গীতা সনাতনী সম্প্রদায়ের সম্পূর্ণ জীবন বিধানও বটে। তিনি শারদাঞ্জলি ফোরামের সারথি হতে পেরে নিজেকে গর্বিত মনে করছেন। তিনি গঠনতন্ত্রে জেলা ও মহানগর কমিটির সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকগণকে নির্বাহী সারথি হিসেবে সংযুক্ত করা এবং ৭ বিভাগের জন্য ৭ জন বিভাগীয় সংগঠনিক সম্পাদক পদ সংযোজনের ব্যাপারটি সমর্থন জানান। তিনি বলেন যে, প্রতিটি সভা চলাকালীন সময়ে মঞ্চের পিছনে একটি ব্যানার থাকলে ভালো হয়। তিনি সুজিত পালের সুপারিশগুলো বিবেচনায় আনার অনুরোধ করেন। এছাড়া গীতা শিক্ষায় ছোটদের জন্য এক সিলেবাস এবং বড়দের জন্য ভিন্ন সিলেবাস প্রণয়নের অনুরোধ জানান।

 

এরপর বক্তব্য রাখেন ময়মনসিংহ জেলা কমিটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শ্রী নিশিকান্ত তালুকদার। তিনি বলেন যে, যেসব শিক্ষার্থী শারদাঞ্জলি গীতা নিকেতনে গীতা শিক্ষা নিচ্ছেন, তাদের শিক্ষা সমাপনের পর কোন সনদপত্র দেয়া যায় কিনা, এব্যাপারে কেন্দ্রীয় কমিটির দৃষ্টি আর্কষণ করেন। গীতা শিক্ষা কত বছর মেয়াদী হবে সেটাও সুনির্দিষ্টকরার সুপারিশ করেন।

 

এরপর গোপালগঞ্জ জেলা আহ্বায়ক কমিটির প্রধান আহ্বায়ক শ্রী শান্ত সরকার বক্তব্য প্রদান করেন। তিনি বলেন যে, কেন্দ্রীয় কমিটির নিজস্ব বড় কোন ফাণ্ড নাই। অথচ প্রতিনিয়ত গীতা শিক্ষা সহ নানান মানবিক এবং স্বেচ্ছাসেবামূলক কর্মকাণ্ডে কেন্দ্রীয় কমিটির মুষ্টিমেয় কয়েকজন সারথি গত তিন বছর ধরে অনুদান দিয়ে যাচ্ছেন। এতে তাদের উপর প্রচণ্ড চাপ পড়ছে। এজন্য তিনি ডোনার ফাণ্ড দ্রুত কার্যকর করা অনুরোধ জানান। এছাড়া গীতা শিক্ষায় দিন দিন ব্যয় বেড়েই চলেছে। জেলা কমিটিগুলোকে এব্যাপারে আর্থিক সহায়ক প্রদানের অনুরোধ জানান। তিনি আরও বলেন যে, গোপালগঞ্জ সনাতনী অধ্যুসিত একটি জেলা। এখানে ধর্ম শিক্ষার অভাব আছে। গীতা নিকেতন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে নতুন প্রজন্মকে ধর্ম শিক্ষার আলোকে আলোকিত করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন । এছাড়া গোপালগঞ্জ এবং ফরিদপুর জেলায় শারদাঞ্জলি ফোরামের কার্যক্রম বিস্তৃত করার জন্য তিনি কাজ করে যাচ্ছেন বলে সভাকে অবহিত করেন।

 

এরপর কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-প্রচার সম্পাদক শ্রী নিহার বিশ্বাস বক্তব্য প্রদান করেন। তিনি বলেন যে, জীবন ও জীবিকার তাগিদে তিনি দীর্ঘদিন মালদ্বীপে অবস্থান করছেন। সেখানে আবস্থান করেই শারদাঞ্জলি ফোরামের সহ-প্রচার সম্পাদক হিসেবে যতটুকু সম্ভব কাজ করে যাচ্ছেন। এই প্রথম তিনি কেন্দ্রীয় কমিটির কোন সভায় উপস্থিত হয়েছেন। এজন্য তিনি নিজেকে ধন্য মনে করছেন। তার এলাকা নরসিংদীতে একটি গীতা নিকেতন প্রতিষ্ঠা করার উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি। এব্যাপারে সার্বিক সহযোগিতা করার জন্য গীতা বোর্ডে মহাসচিব শ্রী রতন চন্দ্র পালকে অনুরোধ করেন। মালদ্বীপ প্রবাসী সংবাদিক শ্রী রনি নন্দী শারদাঞ্জলি ফোরামে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। শ্রী রনি নন্দীকে কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সারথি হিসেবে নির্বাচিত করার জন্য কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি শ্রী বাবুল চন্দ্র পালকে সবিনয় অনুরোধ জানান।

 

এরপর কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-প্রচার সম্পাদক শ্রী লোকনাথ ভৌমিক বক্তব্য প্রদান করেন। আগামী ত্রিবার্ষিক সম্মেলন ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ঢাকাতে আয়োজন করা যায় কিনা এব্যপারে ভেবে দেখার জন্য তিনি উপস্থিত কেন্দ্রীয় কমিটির নীতিনির্ধারকদের সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। কেন্দ্রীয় কমিটির সার্বিক কর্মকাণ্ডে অর্থ সংস্থানের জন্য জেলা কমিটি সহ কেন্দ্রীয় কমিটির সারথিদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। তিনি বলেন যে, আগামী ৩১ অক্টোবর, ২০১৭ ইং বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটির মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে। সুন্দর এবং স্বচ্ছ একটি কমিটির গঠনের লক্ষ্যে আজকের সভায় একটি শক্তিশালী আহ্বায়ক কমিটি গঠন করার অনুরোধ করেন। সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, সাংগঠনিক সম্পাদক, প্রধান সমন্বয়ক, কোষাধ্যক্ষ, প্রচার সম্পাদক পদসহ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সাংগঠনিক পদ আহ্বায়ক কমিটি নির্বাচিত করে অন্যান্য পদগুলো পরবর্তীতে যারা নির্বাহী পদে নির্বাচিত হবেন, তারাই যাতে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন, এব্যাপারে আজকে সভায় সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য অনুরোধ করেন। তিনি আরও বলেন যে, পূজা ম্যাগাজিন প্রকাশ করা অত্যন্ত কঠিন কাজ। এব্যাপারে কেন্দ্রীয় কমিটির সম্মানিত সভাপতি শ্রী বাবুল চন্দ্র পাল যথেষ্ট পরিশ্রম করছেন। ম্যাগাজিন প্রকাশনায সার্বিক সহযোগিতা দিচ্ছেন ঢাকা মহানগর কমিটির সম্মানিত সভাপতি শ্রী রতন চন্দ্র পাল। এজন্য তাদের ধন্যবাদ জানান। এই প্রকাশনাকে অব্যহত রাখতে হলে যার যার অবস্থান থেকে সারথিদের সার্বিক সহযোগিতা প্রয়োজন। কেউ শুভেচ্ছা বাণী দিয়ে, কেউ বাণিজ্যিক বিজ্ঞাপন দিয়ে সহযোগিতা করতে হবে। তিনি বলেন যে, জেলা সফরের ব্যাপারে সিডিউল ঠিক করার জন্য পলাশ নাথ এবং তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল। কিন্তু নানা ব্যস্ততার কারণে সেটা সম্ভব হয়ে উঠেনি। তবে যত দ্রুত সম্ভব যাতে কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে জেলা সফরে যাওয়া যায় এব্যাপারে যথাযথ পরিকল্পনা নেয়া হবে।

 

এরপর নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি শ্রী আশীষ কুমার দাস বক্তব্য প্রদান করেন। তিনি তার বক্তব্যে বলেন যে, একটি সংগঠন সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী না-হলে সেই সংগঠন বেশীদিন টিকবে না। এজন্য প্রথমে সাংগঠনিক ভিত শক্তিশালী করতে হবে। সাংগঠনিক পদগুলোকে আরও সক্রিয় করতে হবে। বর্তমানে কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি উপর প্রচন্ড চাপ পড়ছে। তিনি অর্থ সংগ্রহ থেকে শুরু করে কমিটির অফিসিয়াল অনেক কাজ তিনি নিজ দায়িত্বে করে থাকেন। এটা মোটেই ঠিক নয়। ডোনার ফাণ্ড কার্যকর করতে হবে। ডোনার ফাণ্ড থেকে প্রতি বছর যদি ৩ লাখ টাকা সংগ্রহ হয়, তাহলে সেখান থেকে প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকা খরচ করে এক বা দুজন শারদাঞ্জলি ফোরামের শিক্ষিত সারথিকে অর্থ সংগ্রহ সহ অফিসিয়াল কার্যাদি সম্পাদানের জন্য নিয়োগ দেয়া যেতে পারে। এতে কেন্দ্রীয় সভাপতির উপর চাপ কমে যাবে। তিনি বলেন যে, শারদাঞ্জলি ফোরামের “সনাতনী সেতু বন্ধনে কৃষ্টি, সংস্কৃতি, সত্য ও শান্তির অন্বেষণে তারুণের অভিযাত্রা” এই শ্লোগানের বিশাল অর্থ বহন করে। এমন শ্লোগান সচরাচর কোন সনাতনী সংগঠনে আছে বলে আমার জানা নাই। এই শ্লোগান বিশাল অর্থবহ। এই শ্লোগানের চেতনা সর্বস্তরে শারদাঞ্জলি ফোরামের সারথিদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে। তিনি আরো বলেন যে, গুরুবাদের কারণে আমরা আমাদের মূল ধর্মীয় ভাবধারা এবং চেতনা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছি। আমরা সনাতনী। আমাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে ইষ্ট লাভ করা। এটাই সনাতনী সম্প্রদায়ের চেতনায় আনতে হবে। এটাই সনাতনীদের মূল সেতুবন্ধন। এপ্রসঙ্গে তিনি শ্রীমদ্ভগবদগীতার উদাহরণ তুলে ধরেন। গীতা শিক্ষায় শারদাঞ্জলি ফোরামের উদ্যোগের তিনি খুবি প্রশংসা করে। তিনি গীতা শিক্ষার উপর গুরুত্ব দেয়ার জন্য অনুরোধ করেন। এছাড়া সনাতনী সম্পদায়ের নানা বিভাজন থেকে বেরিয়ে এসে একটি ঐক্যবদ্ধ সনাতনী সমাজ গড়ার উপর গুরুত্ব দেয়ার পরামর্শ দেন।

এরপর কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক শ্রী সত্যজিৎ চৌধুরী বক্তব্য প্রদান করেন। তিনি গীতা শিক্ষার্থীদের সদনপত্র প্রদানের সুপারিশ করেন। যেহেতু গীতা শিক্ষা দিন দিন বাড়ছে, তাই প্রতিটি গীতা নিকেতনের ছাত্র-ছাত্রী সংখ্যা, শিক্ষকের নাম সহ অন্যান্য তথ্য কেন্দ্রীয়ভাবে সংরক্ষণের গুরুত্ব আরোপ করেন। ফোরামের নিবন্ধন করা খুবি প্রয়োজন। ফোরামের নিবন্ধন না-থাকায় গত বছর অনুমোদন নেয়ার পরও পুলিশ চট্টগ্রামে নির্দিষ্ট স্থানে সম্মেলন করতে অনুমতি দেয়নি। ওয়েব সাইটে শারদাঞ্জলি ফোরামের প্রতিটি সারথির ছবিসহ পূর্ণাঙ্গ ডাটা সংরক্ষণের উদ্যোগ তিনি নিয়েছিলেন। কিন্তু সারথিদের আগ্রহের অভাবে সেটা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হচ্ছে না। এব্যাপারে সকল স্তরের সারথিদের সাহায্য কামনা করেন। ফোরামের গুরুত্ব বিবেচনা করে প্রতিটি বিভাগে একজন করে সাংগঠনিক সম্পাদক গঠনতন্ত্রে সংযোজনের ব্যাপারটাকে তিনি পূর্ণ সমর্থন দেন। দেশে যে তথ্য-প্রযুক্তি আইন আছে, সেটা অনেক সারথি মানছে না। এটা যাতে সকল সারথি মেনে চলেন, এব্যাপারে সকল সারথিকে সচেতন করতে হবে। এই তিন বছরে শারদাঞ্জলি ফোরামের অনেক অর্জন আছে। সেটাকে ধরে রাখতে হবে। ভালো কাজ করতে গেলে বন্ধু যেমন থাকে, শক্রও কম থাকে না। শারদাঞ্জলি ফোরামের বিরুদ্ধে কিছু শত্র“ আছে। এব্যাপারে সর্বস্তরের সারথিদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানান।

কেন্দ্রীয় কমিটির উপদেস্টামণ্ডলীর সম্মানিত উপদেস্টা শ্রী অরুন চন্দ্র মজুমদার এরপর বক্তব্য প্রদান করেন। তিনি তার বক্তব্যে বলেন যে, শারদাঞ্জলি ফোরামের সৃষ্টিলগ্ন থেকেই তিনি ফোরামের সাথে সম্পৃক্ত আছেন। কিন্তু নানা ব্যস্ততার কারণে সব সময় ফোরামের কর্মকাণ্ড সহ সভায় উপস্থিত থাকা সম্ভব হয় না। তবে শারদাঞ্জলি ফোরামের বহুমাত্রিক কর্মকাণ্ডে তিনি খুবি আনন্দিত। গত তিন বছর দুর্গাপূজায় ফোরামের উদ্যোগে ম্যাগাজিন প্রকাশিত হয়েছে। তিনটি ম্যাগাজিনেই তার লেখা প্রকাশিত হয়েছে। এজন্য তিন ম্যাগাজিন প্রকাশনা সাথে জড়িত সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন যে, প্রতিটি ম্যাগাজিনেই অনেক সৃজনশীল লেখা সন্নিবেশিত হয়েছে। ম্যাগাজিন পড়ে শারদাঞ্জলি ফোরামের সারথিরা অনেক কিছু জানতে পারছে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে অন-লাইনে লেখালেখির সাথে জড়িত আছেন। নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও তিনি লিখে যাচ্ছেন। ফোরামের কার্যক্রম যেভাবে বিস্তৃত হচ্ছে, তাতে ফোরামের নিবন্ধন করা প্রয়োজন। নিবন্ধন না-হলে ভবিষ্যতে নানা বাধা-বিপত্তি আসতে পারে। তিনি আরও বলেন যে, সবকিছু নিয়েই সনাতন ধর্ম। সনাতন ধর্মে বহু বৈচিত্র, বহু বর্ণ আছে। কেউ সাকার, কেউ নিরাকারভাবে স্রষ্টার আরাধনা করে থাকেন। এটাই সনাতন ধর্মের মূল বৈশিষ্ট। শারদাঞ্জলি ফোরামের বয়স মাত্র তিন বছর। এই তিন বছরে অনেক অর্জন আছে। অনেক সনাতনী সংগঠনের মাঝে শারদাঞ্জলি ফোরাম অন্যতম একটি সংগঠন। তিনি শারদাঞ্জলি ফোরামের উদ্যোগে গীতা শিক্ষার ভূয়সী প্রসংশা করেন।, শারদাঞ্জলি ফোরামের সকল কর্মকাণ্ডে সর্বাÍক সহযোগিতা এবং সমর্থন থাকবে বলে তিনি জানান।

এরপর কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সারথি শ্রী উৎপল ভট্টচার্য বক্তব্য প্রদান করেন। তিনি বলেন যে, শারদাঞ্জলি ফোরাম অতি অল্প সময়ে সারা বাংলাদেশে ধর্মীয় ও মানবিক কার্যক্রম সম্প্রসারিত করতে সক্ষম হয়েছে- যা অন্য কোন সংগঠনের এই অর্জন নাই। তিনি গীতা নিকেতনগুলোতে মনিটরিং ব্যবস্থা চালু করার প্রস্তাব করেন। তিনি আরও বলেন যে, গঠনতন্ত্রে ৭ জন বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সংযোজনের ব্যাপারে সহমত পোষণ করেন। এরসাথে তিনি আরও একটি প্রস্তাব রাখেন। ৭ বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকের সাথে কেন্দ্রীয়ভাবে একজন সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ সৃষ্টির প্রস্তাব করেন। কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকদের সাথে সমন্বয় করে কাজ করতে পারবেন। তিনি আরও বলেন, তৃণমূলের সারথিদের সাথে কেন্দ্রের যোগাযোগ খুবই কম। শুধু সভাপতি নয়, অন্যান্য সাংগঠনিক পদে যারা আছেন- তাদেরও প্রতিনিয়ত যোগাযোগ বাড়াতে হবে। তাতে তৃণমূলের সারথিরা কাজে উৎসাহত পাবে। তিনি ঢাকা মহানগর কমিটির সম্মানিত সভাপতি রতন পালকে ফোরামে কর্মকাণ্ডে সার্বিক সহযোগিতা প্রদানের জন্য ধন্যবাদ জানান।

কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সারথি শ্রী দিলীপ কুমার সাহা এরপর বক্তব্য প্রদান করেন। তিনি তার বক্তব্যের প্রথমে উৎপল ভট্টচার্যের ৭ বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকের সাথে একজন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ গঠনতন্ত্রে সংযোজনের প্রস্তাবকে পূর্ণ সমর্থন জানান। তিনি আক্ষেপ করে বলেন যে, চাহিদা দেবার পরও তিনি এবার টিশার্ট পাননি। তিনি পরামর্শ দেন যে, আগামীতে যারা টিশার্টের চাহিদা দেবে, তারা যেন টিশার্ট পায় সেদিকে যেন লক্ষ্য রাখা হয়। তিনি আরও বলেন যে, কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সারথিদের তৎপরতা খুবই দুর্বল। যার কারণে সভাপতির উপর চাপ থেকেই যাচ্ছে। আগামীতে যে নতুন কমিটি হবে, তাতে দক্ষ এবং অভিজ্ঞ সারথিদের স্থান দিতে হবে। অতীতে যেসব ভুল-ভ্রান্তি হয়েছে তা থেকে শিক্ষা নিয়ে আগামীতে নতুন নতুন কর্মসূচি প্রণয়ন করে এগিয়ে যেতে হবে। তৃণমূলের সারথিরা কেন্দ্রের সঠিক দিকনির্দেশনার দিকে তাকিয়ে থাকে। তাদের সঠিক দিকনির্দেশনা দিতে হবে। গীতা নিকেতনের শিক্ষক এবং ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য কেন্দ্র থেকে সদনপত্রের বিধান চালু করতে হবে। যাতে ছাত্র-ছাত্রীরা ক্লাস চলাকালীন নাস্তা পায়, জেলা কমিটি থেকে তাদের জন্য নাস্তার ব্যবস্থা করতে হবে। তিনি জেলা কমিটিগুলোর পরামর্শ নিয়ে দ্রুত একটি একক সিলেবাস প্রণয়ন করার পরামর্শ দেন।

এরপর কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি শ্রী অজিত কুমার রায় বক্তব্য প্রদান করেন। তিনি তার বক্তব্যে বলেন যে, জেলায় জেলায় গীতা শিক্ষা, স্বেচ্ছাসেবামূলক এবং মানবিক কার্যক্রম যত বিস্তৃত হচ্ছে, কেন্দ্রের উপর প্রচণ্ড আর্থিক চাপ পড়ছে। এজন্য কেন্দ্রীয়ভাবে ডোনার ফাণ্ড গঠনের যে সিদ্ধান্ত হয়েছে, সেটা দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে। এব্যাপারে কেন্দ্রীয় কমিটির সর্বস্তরের সারথিদের সবাÍকভাবে সহযোগিতার অনুরোধ জানান। গঠনতন্ত্রে এখনও কিছু অসামঞ্জস্যতা আছে। সেগুলো দূর প্রয়োজন। গীতা নিকেতনের শিক্ষা কার্যক্রমকে সুষ্ঠ ও সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য একটি সুনির্দিষ্ট সিলেবাস প্রণয়ন করার পরামর্শ দেন। তিনি আরও বলেন যে, ফোরামের জন্য যতটুকু সময় দেয়া প্রয়োজন, সেটা তিনি দিতে পারছেন না। এজন্য তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন। তবু তার পক্ষ থেকে ফোরামের সকল কার্যক্রমে সার্বিক সহযোগিতা থাকবে বলে তিনি আশ্বস্ত করেন। তিনি বলেন যে, সভায় যখন কোন সারথি সঞ্চালনার দায়িত্বে থাকেন, সভা আরম্ভের পূর্বেই কে কখন বক্তব্য দেবে এবং কিভাবে সভার কার্যক্রম পরিচালিত হবে সেটা যেন নির্ধারণ করে নেয়া ভালো। সভার এজেন্ডাগুলো প্রথমে সাধারণ সম্পাদক উপস্থাপন করাই বাঞ্চনীয়। সভায় উপস্থিত সারথিদের বক্তব্যের পর সভাপতি তার সমাপনী ভাষণে সারথিদের বক্তব্যে আলোকে তিনি তার বক্তব্য প্রদান করলে সেটাই উত্তম হবে বলে তিনি জানান।

এরপর কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি এবং ঢাকা মহনগর কমিটির সভাপতি শ্রী রতন চন্দ্র পাল বক্তব্য প্রদান করেন। তিনি তার বক্তব্যে বলেন যে, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু সংস্কার সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, অসংখ্য ধর্মীয় গ্রন্থ প্রণেতা ড. শিবশংকর চক্রবর্তীর ৯০তম জন্মজয়ন্তী উৎসবে অংশগ্রহণের কারণে আজ সভায় উপস্থিত হতে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। এজন্য তিনি আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেন। গীতা শিক্ষা নিয়ে সম্মানিত সারথিদের বক্তব্যে জবাবে বলেন যে, এখনও গীতা শিক্ষায় সুষ্ঠভাবে পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে না। আগোছালোভাবে কাজ করলে সমস্যা বাড়বে। আমরা বহুমাত্রিক চেতনা নিয়ে কাজ করছি। কিন্তু আমাদের গীতা শিক্ষাকে অগ্রাধিকার দিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। গীতা বোর্ড করা হয়েছে, কিন্তু গীতা বোর্ডে পূর্বের নির্বাহী সচিব পিয়াল শর্মাকে বার বার তাগাদা দেয়ার সত্ত্বেও এখন পর্যন্ত গীতা নিকেতনের কোন তথ্যই সরবরাহ করা হয়নি। এজন্য কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি শ্রী বাবুল পালকে অনুরোধ করেন যাতে পিয়াল শর্মা দ্রুত গীতা নিকেতনের তথ্যগুলো সরবরাহ করেন। তিনি আরও বলেন যে, প্রতিটি জেলা কমিটির কাছে গীতা নিকেতনের বিস্তারিত তথ্য চাওয়া হয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগের ব্যাপার হলো, এখনো কোন জেলা কমিটি এব্যাপারে পূর্ণাঙ্গ কোন তথ্য পাঠায়নি। তিনি গীতা নিকেতনের পূর্ণাঙ্গ তথ্য পাঠানোর জন্য আবারও অনুরোধ করেন। তিনি চান গীতা বোর্ডের মাধ্যমে মনিটরিং সিস্টেম চালু সহ জেলায় জেলায় গীতা নিকেতনের তথ্যগুলো গীতা বোর্ডে সংরক্ষিত থাকুক। এতে গীতা শিক্ষা পরিচালনায় অনেক সুবিধা হবে। আমাদের কাজের একটি ছক তৈরি করতে হবে। সকল কাজের বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে। কাজের সমালোচনা হয়, সেই সমলোচনা থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। গীতা শিক্ষায় সিলেবাস প্রণয়ন সম্পর্কে তিনি বলেন যে, গীতা যে আঠার অধ্যায় আছে, সেই অধ্যায়গুলোকে কেন্দ্র করে সিলেবাস প্রণয়ন করা যেতে পারে। এব্যাপারে একটি সুষ্ঠু নীতিমালা তৈরি করা প্রয়োজন। শিক্ষকদের সম্মানী ভাতা দেয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন যে, এটা সম্ভব নয়। আমাদের অনেক আর্থিক সীমাবদ্ধতা আছে। তবে শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের ভিত্তিতে সনদপত্র দেয়া যেতে পারে। তিনি জেলা সফর নিয়ে বলেন যে, অতি দ্রুত জেলা সফর শুরু করতে হবে। সাতক্ষীরা, ময়মনসিংহ, রংপুর, দিনাজপুর, সিলেট জেলাগুলো সফরে যেতে হবে। জেলা সফরের জন্য প্রয়োজনে তিনি তার নিজস্ব গাড়ি দিতে প্রস্তুত আছেন। তিনি বলেন যে, কেন্দ্রীয় কমিটির সারথিদের আরও সক্রিয় হতে হবে। শুধু সভাপতি নয়, সকল সাংগঠনিক পদের সারথিদের যার যার অবস্থান থেকে কাজ করতে হবে। তিনি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যান, বিভিন্ন জায়গায় যান। অনেক অনুষ্ঠানেই বক্তারা শারদাঞ্জলি ফোরামের ধর্মীয় এবং মানবিক কর্মকাণ্ডে প্রসংগে করেন। শারদাঞ্জলি ফোরাম সারা বাংলাদেশে কমিটি না-হলেও ফোরামের বহুমাত্রিক কার্যক্রমের কারণে অন্যান্য সংগঠনের কাছে প্রসংশা পেতে সক্ষম হচ্ছে। এটা আমাদের জন্য গৌরবের। আমাদের এই অর্জন ধরে রাখতে হবে। নারী শক্তিকে ফোরামের কার্যক্রমে আরও বেশি করে সম্পৃক্ত করতে হবে। নিবন্ধন নিয়ে তিনি বলেন যে, নিবন্ধনের প্রক্রিয়া অনেকদূর এগিয়ে গেলেও একটি বিশেষ বিভাগে যোগাযোগে সমস্যা হওয়ায় এবার নিবন্ধন করা সম্ভব হয়নি। তবে আগামীতে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ মাধ্যমে নিবন্ধন প্রক্রিয়া শুরু করা হবে। সামনে ত্রিবার্ষিক সম্মেলন। সম্মেলন যাতে সফল হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখবে হবে। অতীতে দেখা গেছে সম্মেলন চলাকালীন সময়ে দুপুরের খাবার পর সারথিরা সম্মেলন স্থল ত্যাগ করে চলে যান। এতে অতিথিদের কাছে আমাদের হেয় প্রতিপন্ন হতে হয়েছে। আগামিতে এমন যাতে না-হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। আমি নিজে থাকবো। যাদের সম্মেলনে যে দায়িত্ব দেয়া হবে, সঠিকভাবে পালন করতে হবে। বর্তমান কমিটির মেয়াদ ২০১৭ এর ৩১ অক্টোবর শেষ হয়ে যাচ্ছে। আহ্বায়ক কমিটি গঠনের মাধ্যমে একটি শক্তিশালী কমিটি গঠন করতে হবে। তিনি বলেন যে, গীতার চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে। দ্রুত গীতা ছাপাতে হবে। তিনি আবারও বলেন যে, গীতা শিক্ষাকে অগ্রাধিকার দিয়ে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থেকে গীতা শিক্ষা সহ মানবকল্যাণমূলক কাজ করে যেতে হবে।

যানজটের কারণে সভায় বিলম্বে উপস্থিত হন কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাহিত্য সম্পাদক শ্রী সমীর কুমার বালা এবং কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সারথি, কুমিল্লা মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক শ্রী পিংকু চন্দ। সভাপতি সমাপনী ভাষণ চলাকালীন তারা উপস্থিত হওয়ায় সভাপতি তার বক্তব্য কিছুক্ষণের জন্য স্থগিত রেখে তাদের বক্তব্য দেয়ার সুযোগ দেন।

শ্রী সমীর বালা তার বক্তব্যে বলেন যে, তার নিজ জেলা রাজবাড়ীতে ৫টি শারদাঞ্জলি গীতা নিকেতন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সেগুলো সুষ্ঠভাবে পরিচালিত হচ্ছে। নিয়মিতন ছাত্র-ছাত্রীরা ক্লাসে আসছে। তিনি দুঃখ করে বলেন যে, একটি বিশেষ সংস্থায় চাকরি করার কারণে ফোরামের সার্বিক কর্মকাণ্ডে অংশ নেয়া সম্ভব হচ্ছে না। তবু তিনি চেষ্টা করে যাচ্ছেন ফোরামের কাজে সম্পৃক্ত থাকার। তিনি জানান যে, তার মেয়ে জন্মগতভাবে প্রতিবন্ধী। আগামী মাসে মেয়েকে নিয়ে তিনি ভারত যাচ্ছেন। তার মেয়ের সুস্থতার জন্য ভগবানের কাছে প্রার্থনা করার তিনি সবাইকে অনুরোধ করেন।

এরপর কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সারথি, কুমিল্লা মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক শ্রী পিংকু চন্দ বক্তব্য প্রদান করেন। তিনি প্রথমেই কুমিল্লা মহানগর কমিটির পক্ষ থেকে উপস্থিত সারথিদের শুভেচ্ছা জানান। কুমিল্লা থেকে আসার পথে প্রচণ্ড যানজটের কারণে সভায় সময়মত উপস্থিত হতে না-পারায় দুঃখ প্রকাশ করেন। তিনি সভাপতির সমাপনী ভাষণ চলাকালীন তাকে বক্তব্য দেয়া সুযোগ দেবার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন যে, অনেক কিছু বলার ছিলো, অনেক অভিমান আছে, অভিযোগও আছে, কিন্তু সময় স্বল্পতার কারণে বলা সম্ভব হচ্ছে না। তবে অতীত নিয়ে শুধু সমালোচনা করলে চলবে না, আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে হবে। আমাদের একসাথে কাজ করতে হবে। তিনি বলেন যে, কেন্দ্রীয় কমিটিতে যেহেতু সময় দিচ্ছে পারছি না, তাই আমরা কুমিল্লা মহানগর কমিটির যে ৪ জন সারথি কেন্দ্রীয় কমিটিতে আছি, তারা সভাপতির বরাবর পদত্যাগ পত্র পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের পদত্যাগ পত্র গ্রহণ করা হয়নি। চট্টগ্রামে মাতৃশক্তি ইউনিট করা হয়েছে। এটা গঠনতন্ত্রের সাংঘর্ষিক কিনা জানতে চান। তিনি বলেন এব্যাপারে কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতির অনুমতি নেয়া উচিত ছিল। গঠনতন্ত্রের বাইরে গিয়ে নিজেরা কিছু করলে পরবর্তীতে নানা জটিলতা দেখা দেবে। এব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকার অনুরোধ জানান। তিনি বলেন যে, কুমিল্লা মহানগর কমিটি একটি ডোনার ফাণ্ড করেছে। সেখানে ১৪ হাজার টাকা জমা হয়েছে। সে টাকা এখনও খরচ করা হয়নি। ফোরামের চলমান খরচ নিজেদের পকেট থেকে বহন করা হয়। তিনি আরও বলেন, ফোরামের মধ্যে জবাবদিহিতা থাকা প্রয়োজন। হিসাব-নিকাশে স্বচ্ছতা থাকতে হবে। কুমিল্লা গীতা উপকরণে অভাবে নতুন করে গীতা নিকেতন প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হচ্ছে না। তিনি দ্রুত গীতা ছাপানোর জন্য অনুরোধ করেন। তিনি বলেন যে, ফেসবুক হলো অনুভূতি প্রকাশের মাধ্যম। এখানে ফোরামের বিরুদ্ধে, কোন সারথির বিরুদ্ধে সমলোচনা না করাই ভালো। এতে ফোরামের সুনাম ক্ষুন্ন হয়। এব্যাপারে সবাইকে সর্তক থাকার অনুরোধ করেন। তিনি আরও বলেন যে, ইতিমধ্যে কুমিল্লা জেলা কমিটির গঠনে লক্ষ্যে শ্রী দিলীপ কুমার সাহাকে আহ্বায়ক করে একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। আশা করছি অচিরেই একটি শক্তিশালী কুমিল্লা জেলা কমিটি গঠন করা সম্ভব হবে।

উপস্থিত সারথিদের বক্তব্য শেষে সভাপতি তার সমাপনী ভাষণের পূর্বে সভার আলোচ্য বিষয়সমূহের সিদ্ধান্ত গ্রহণের অনুরোধ জানান। তিনি নিুলিখিত বিষয়গুলো উপস্থিত সারথিদের উপস্থাপন করেন এবং সারথিদের সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্তসমূহ গৃহীত হয়ঃ

৩.০ শারদাঞ্জলি ফোরামের তৃতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর তারিখ, স্থান নির্ধারণ, অর্থ সংস্থান, এবং পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণঃ

তৃতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিক তথা ত্রিবার্ষিক সম্মেলন সুষ্ঠ ও সুন্দরভাবে পরিচালনা, ব্যবস্থাপনা সহ সফল করার জন্য সভায় বিস্তারিত আলোচনা শেষে নিুোক্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়ঃ

৩.১ ত্রিবার্ষিক সম্মেলনের স্থান, তারিখ, অর্থ সংস্থান এবং পরিকল্পনার ব্যাপারটি এই সভায় মুলতবী রাখা হয়। সম্মেলনের স্থান, তারিখ, অর্থ সংস্থান এবং পরিকল্পনা সহ সম্মেলনকে সফল করার জন্য আজকের সভায় শ্রী বাবুল চন্দ্র পালকে নির্বাহী উপদেষ্টা, শ্রী রতন চন্দ্র পালকে প্রধান আহ্বায়ক এবং সঞ্জয় ভৌমিককে সদস্য সচিব করে নিুোক্ত সারথিদের নিয়ে একটি সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি করা হয়ঃ

 

১. শ্রী বাবুল চন্দ্র পাল নির্বাহী উপদেষ্টা

২. শ্রী রতন চন্দ্র পাল প্রধান আহ্বায়ক

৩. শ্রী অজিত কুমার রায় যুগ্ম-আহবায়ক

৪. শ্রী আশীষ কুমার দাস যুগ্ম-আহবায়ক

৫. শ্রী দুলাল মজুমদার যুগ্ম-আহবায়ক

৬. শ্রী দিলীপ কুমার সাহা যুগ্ম-আহবায়ক

৭. শ্রী সঞ্জয় ভৌমিক সদস্য সচিব

৮. শ্রী পলাশ নাথ সদস্য

৯. শ্রী পুলক চক্রবর্তী সদস্য

১০. শ্রী নিকেতন দে সদস্য

১১. শ্রী লোকনাথ ভৌমিক সদস্য

১২. শ্রী নিহার বিশ্বাস সদস্য

১৩. শ্রী দেবাশীষ পাল (দেবু) সদস্য

১৪. শ্রী কল্লোল রায় সদস্য

১৫. শ্রী মিন্টু পাল সদস্য

১৬. শ্রীমতি জয়মিতা দাস সদস্য

১৭. শ্রী মৃণাল মণ্ডল সদস্য

১৮. শ্রী সুমন চন্দ্র দাস সদস্য

১৯. শ্রী সুমন ধর সদস্য

২০. শ্রী উৎপাল ভট্টচার্য সদস্য

২১. শ্রী উত্তম চন্দ্র দাস সদস্য

২২. শ্রী শান্তুনু রায় প্রশান্ত সদস্য

২৩. শ্রী তাপস সূত্র ধর সদস্য

২৪. শ্রী বিপুল রায় সদস্য

২৫. শ্রী জয় মানিক সদস্য

২৬. শ্রী রতন হালদার সদস্য

২৭. শ্রী মিঠুন ব্যাপারী সদস্য

২৮. শ্রী গৌরা ঙ্গ নাইডু সদস্য

২৯. শ্রী সাজু বাগতি সদস্য

৩০. শ্রী কেশব বাগতি সদস্য

৩১. শ্রী রাজু বাগতি সদস্য

৩২. শ্রী রাহু ল মল্লিক সদস্য

৩৩. শ্রী গোপাল মল্লিক সদস্য

৩৪. শ্রী নারায়ণ নায় সদস্য

 

৩.২ উপরোক্ত কমিটির সারথিবৃন্দ আগামীতে একটি সভা করে সম্মেলনের স্থান, তারিখ, অর্থ সংস্থান এবং পরিকল্পনার ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।

৩.৩ প্রস্তুতি কমিটির উপরোক্ত সারথিগণ ছাড়াও প্রয়োজনে পরবর্তীতে আরও সারথি সংযোজন করে দায়িত্ব বন্টন করেন দেয়া হবে।

৪.০ কেন্দ্রীয় কমিটির তিন বছর মেয়াদ পূর্ণ হওয়ায় নতুন কমিটি গঠনের লক্ষ্যে আহবায়ক কমিটি গঠন নিয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণঃ

আগামী ৩১ অক্টোবর, ২০১৭ ইং বর্তমান কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে। গঠনতন্ত্রের ৪.০ ধারার ৪.২ উপ-ধারা মোতাবেক নতুন কমিটি গঠনের লক্ষ্যে একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করতে হবে। আজকের সভায় এব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা শেষে নিুোক্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়ঃ

৪.১ গঠনতন্ত্রের ৪.০ ধারার ৪.২ উপ-ধারা মোতাবেক নতুন কমিটি গঠনের লক্ষ্যে শ্রী রতন চন্দ্র পালকে প্রধান আহ্বায়ক এবং শ্রী দিলীপ কুমার সাহাকে সদস্য সচিব করে নিুোক্ত সারথিদের নিয়ে ১১ সদস্যের একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়।

 

১. শ্রী রতন চন্দ্র পাল আহ্বায়ক

২. শ্রী অজিত কুমার শীল যুগ্ম-আহবায়ক

৩. শ্রী অজিত কুমার রায় যুগ্ম-আহবায়ক

৪. শ্রী আশীষ কুমার দাস যুগ্ম-আহবায়ক

৫. শ্রী দুলাল মজুমদার যুগ্ম-আহবায়ক

৬. শ্রী দিলীপ কুমার সাহা সদস্য সচিব

৭. শ্রী উৎপল কুমার সাহা সদস্য

৮. শ্রী পলাশ নাথ সদস্য

৯. শ্রী পিংকু চন্দ সদস্য

১০. শ্রী লিটন চৌধুরী সদস্য

১১. শ্রী দেবাশীষ পাল (দেবু) সদস্য

 

৪.২ উপরোক্ত আহ্বায়ক কমিটির সারথিগণ নিজেদের মধ্যে মত বিনিময় করে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, সাংগঠনিক সম্পাদক, প্রচার সম্পাদক, কোষাধ্যক পদ সহ আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদ ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে ঘোষণা করবেন। সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে যে কমিটি ঘোষিত হবে। পরবর্তীতে তারা নিজেরা সময়ে সময়ে মত বিনিময় করে অন্যান্য পদগুলো নির্বাচিত করবেন। এব্যাপারে প্রয়োজনে জেলা এবং মহানগর কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকগণের পরামর্শ নেবেন, যাতে তৃণমূলের সারথিরা কেন্দ্রীয় কমিটির বিভিন্ন পদে অধিষ্ঠিত হতে পারে।

৪.৩ নতুন কমিটি ঘোষণা না-হওয়া পর্যন্ত বর্তমান কমিটি ফোরামের দৈনন্দিন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে যাবেন। তবে তারা কোন নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন না।

 

৫.০ সদ্য সমাপ্ত দুর্গা পূজায় শারদাঞ্জলি ফোরামের উদ্যোগে বিক্রিত টিশার্ট এবং ম্যাগাজিন প্রকাশনা সংক্রান্ত চূড়ান্ত হিসাব সভাকে অবহিতকরণ।

 

এ প্রসংগে কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি শ্রী বাবুল পাল বলেন যে, ১৪২৪ বঙ্গাব্দে অনুষ্ঠিত দুর্গা পূজায় নিজস্ব উদ্যোগে ১৫০০ র্টিশার্ট তৈরি করা হয়। বিভিন্ন জেলায় প্রচুর চাহিদা থাকার সত্বেও বড় মাপের টিশার্ট না-থাকায় শেষ মুহূর্তে টিশার্ট সরবরাহ করা সম্ভব হয়নি। ছোটদের প্রায় ৬০০ পিস টিশার্ট অবিক্রিত থেকে যায়। টিশার্ট বিক্রি করে কুরিয়ার, যাতায়াত, বিকাশ খরচ বাদ দিয়ে ১,৭৮,০০০.০০ টাকা পাওয়া গেছে। এই হিসাব কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সারথি শ্রী সুমন ধর থেকে পাওয়া গেছে। টিশার্ট বিক্রির সম্পূর্ণ অর্থ গীতা ফাণ্ডে হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। উল্লেখ্য যে, টিশার্ট তৈরিতে সম্পূর্ণ খরচ বহন করেছেন শারদাঞ্জলি ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির উপদেষ্টামণ্ডলীর সম্মানিত উপদেষ্টা শ্রী লিটন চন্দ্র পাল। তাঁর এই মহানুভবতার জন্য আজকের সভায় শ্রী লিটন পালের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন সহ ধন্যবাদ প্রস্তাব গৃহীত হয়। এছাড়া টির্শাট বিক্রি এবং বিপননে সার্বিক দায়িত্ব পালন করার জন্য শ্রী পলাশ চন্দ্র নাথ এবং শ্রী সুমন ধরকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করা করা। যেসকল সারথি এবং শুভাকাঙ্খি শারদাঞ্জলি ফোরামের টিশার্ট ক্রয় করেছেন তাদেরও আজকের সভায় ধন্যবাদ জানানো হয়।

 

ম্যাগাজিন প্রকাশনা সম্পর্কে কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি শ্রী বাবুল পাল বলেন যে, ১৪২৪ বঙ্গাব্দে শারদাঞ্জলি ফোরাম প্রকাশিত পূজা ম্যাগাজিন প্রকাশনায় সর্বাÍক সহযোগিতা দিয়েছেন ঢাকা মহানগর কমিটির সভাপতি শ্রী রতন চন্দ্র পাল। তাঁর নিজস্ব প্রকাশনা সংস্থা দিকদর্শন প্রকাশনা লিঃ থেকে ম্যাগাজিন প্রকাশিত হয়েছে। এতে খরচ হয়েছে ১,২৪,০০০.০০ টাকা। শারদাঞ্জলি ফোরামের পক্ষ থেকে তাঁকে দেয়া হয়েছে মাত্র ৪০ হাজার টাকা। কুরিয়ার সার্ভিস চার্জ এবং ম্যাগাজিন সেটআপে সহ মোট খরচ হয়েছে ৫২ হাজার টাকা। ম্যাগাজিনে শুধুমাত্র সারথিদের শুভেচ্ছা বাণী থেকে অর্থ সংগ্রহ করা হয়েছে। তাছাড়া সারথিদের শুভেচ্ছা বাণীর প্রণামী সংগ্রহ করতে গিয়ে তাকে বার বার তাগাদা দিয়ে হয়েছে বলে তিনি সভা জানান। সভাপতি হিসেবে এটা তার জন্য খুবই বিব্রতর ব্যাপার। তিনি আরো বলেন যে, ম্যাগাজিন প্রকাশনায় সার্বিক তত্ত্বাবধানে তিনি নিজেই ছিলেন। কিন্তু ম্যাগাজিনের জন্য কোন বাণিজ্যিক বিজ্ঞাপন পাওয়া যায়নি। বাণিজ্যিক বিজ্ঞাপন ছাড়া সারথিদের শুধু শুভেচ্ছা বাণীর অর্থ দিয়ে ম্যাগাজিন প্রকাশনা খুবই দূরহ ব্যাপার। আগামীতে ব্যাপারটা গুরুত্বের সাথে বিবেচনায় রাখার অনুরোধ জানান। ম্যাগাজিন প্রকাশনায় সার্বিক সহযোগিতা দেয়ায় আজকের সভায় শ্রী রতন চন্দ্র পালের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানো হয়। এছাড়া যেসব সারথি শুভেচ্ছা বাণী দিয়ে সহযোগিতা করেছেন তাদেরও ধন্যবাদ জানানো হয়।

 

৬.০ নতুন গীতা ছাপানোর কার্যক্রম সম্পর্কে সভাকে অবহিতকরণ।

 

এ প্রসংগে কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি শ্রী বাবুল পাল বলেন যে, নতুন গীতা ছাপানোর প্রক্রিয়া অনেক আগেই শুরু হয়েছিলো। কিন্তু আর্থিক সমস্যা এবং টাইপিং সংক্রান্ত কিছু সমস্যার কারণে ছাপাতে বিলম্বিত হচ্ছে। যদিও আর্থিক সমস্যা আছে, তবুও যাতে আগামী দুই মাসের মধ্যে ১০ হাজার গীতা ছাপানো যায়- এব্যাপারে সর্বাÍক উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। আর্থিক সহযোগিতা দেবার জন্য তিনি জেলা কমিটিগুলোর প্রতি অনুরোধ জানান। তিনি আরও বলেন যে, তিনি গীতা শিক্ষা সংক্রান্ত একটি নীতিমালা প্রণয়ন করে খসড়া ফেসবুকে পোষ্ট দিয়েছিলেন। কিন্তু জেলা কমিটি থেকে তেমন কোন পরামর্শন পাওয়া যায়নি। এব্যাপারে জেলা কমিটিগুলোকে যথাযথ পরামর্শ দেয়ার অনুরোধ জানান। শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের সনদপত্র প্রদান, একটি সিলেবাস প্রণয়ন এবং সুষ্ঠ নীতিমালা প্রণয়ন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা শেষে গীতা সংক্রান্ত ব্যাপারে নিুোক্ত সিদ্ধান্তসমূহ গৃহীত হয়ঃ

 

৬.১ আগামী দুই মাসের মধ্যে যাতে নতুন গীতা পাওয়া যায় এব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

৬.২ শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের কেন্দ্র থেকে সনদপত্র প্রদানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সনদপত্র কি ধরনের হবে- সেটার খসড়া রূপরেখা প্রণয়নের জন্য জেলা কমিটিগুলোর পরামর্শ নেয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

 

৬.৩ সিলেবাস প্রণয়ন এবং গীতা শিক্ষা সংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়নে জেলা কমিটিগুলোর পরামর্শ নেয়া সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

 

৬.৪ জেলাভিত্তিক গীতা নিকেতনের পূর্ণাঙ্গ তথ্য গীতা বোর্ডের মহাসচিবের অফিসে সংরক্ষণ করা হবে। এব্যাপারে জেলা কমিটিগুলোকে সর্বাÍক সহযোগিতা করার অনুরোধ জানানো হয়।

 

৭.০ শারদাঞ্জলি ফোরামের গঠনতন্ত্র নিয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ।

 

এ প্রসংগে কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি শ্রী বাবুল পাল বলেন যে, শারদাঞ্জলি ফোরামের বয়স মাত্র তিন বছর। এটা খুব বেশি সময় নয়। তিনি নিজেই এই গঠনতন্ত্র রচনা করেছিলেন। পরবর্তীতে বিজ্ঞজনের পরামর্শে বেশকিছু সংশোধনী আনা হয়েছে। গঠনতন্ত্র সময়ের প্রয়োজনের সংযোজন এবং সংশোধন হতে পারে এবং হবে। তিনি বলেন যে, আমরা সবাই ফোরামের সারথি। যেহেতু আমরা গীতা শিক্ষা দিচ্ছি, শ্রীমদ্ভগবদগীতার অর্জুনের সারথি হলেন স্বয়ং ভগবান শ্রীকৃষ্ণ। আমরা হলাম ভগবান শ্রীকৃষ্ণের সারথি। গঠনতন্ত্রে সংযোজনের ব্যাপারে যে প্রসংগগুলো নিয়ে ইতিমধ্যে আজকের সভায় বিভিন্ন বক্তার বক্তব্য এসেছে, তার প্রেক্ষিতে বিস্তারিত আলোচনা শেষে এব্যাপারে নিুোক্ত সিদ্ধান্তসমূহ গৃহীত হয়ঃ

 

৭.১ ফোরামের সদস্যপদ লাভের পর সবাই “সারথি” হিসেবে গণ্য হবেন।

৭.২ কেন্দ্রীয় কমিটিতে কেন্দ্রীয়ভাবে ১ জন এবং বাংলাদেশের প্রত্যেক বিভাগ তথা ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, রংপুর, রাজশাহী, খুলনা এবং বরিশাল বিভাগ থেকে একজন করে ৭ জন সহ মোট ৮ জন সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচন করা হবে।

৭.২ জেলা এবং মহানগর কমিটি গঠনের পর প্রত্যেক জেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকগণ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাহী সারথি হিসেবে গণ্য হবেন।

 

৮.০ নতুন লিফলেট ছাপানো নিয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ।

 

এ প্রসংগে কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি শ্রী বাবুল পাল বলেন যে, বর্তমানে যে লিটলেট রয়েছে সেটা ভিশন ২০১৭ সাল পর্যন্ত। তাছাড়া বর্তমান লিপলেটে কিছু ভিশন আছে- যা নিয়ে মাঝে মাঝে বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়। বিশেষ করে জেলায় জেলায় মন্দির নির্মাণ, কর্মসংস্থান ইত্যাদি। তাই নতুন ভিশন সহ কিছু সংশোধনী আনার ব্যাপারে সভাকে তিনি অনুরোধ করেন। এব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা শেষে নিুোক্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়ঃ

 

৮.১ সভাপতি কর্তৃক সুপারিশকৃত সংশোধনী গ্রহণ করা হয় এবং ১০ হাজার সংশোধিত লিফলেট ছাপানোর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

 

৮.২ সংশোধিত লিফলেট দিকদর্শন প্রকাশনা লিঃ থেকে ছাপানো সহ লিফলেট ছাপানোর খরচ কেন্দ্রীয় ফাণ্ড থেকে বহন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

 

৯.০ অন্যান্য প্রসংগঃ

 

৯.১ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির স্থায়ী ডোনা ফাণ্ড গঠনের অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণঃ

 

এ প্রসংগে কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি শ্রী বাবুল পাল বলেন যে, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির উদ্যোগে একটি স্থায়ী ডোনার ফান্ড গঠন নিয়ে গত জুলাই ১৪, ২০১৭ তারিখের সভায় উপস্থিত সারথিদের সম্মতি সাপেক্ষে ৭ জন সারথি প্রতি মাসে ১০০০ টাকা, ৪ জন সারথি ৫০০ টাকা, ৩ জন সারথি ৩০০ টাকা, ১৩ জন সারথি ২০০ টাকা এবং ৩ জন সারথি ১০০ টাকা করে প্রতি মাসে স্থায়ী ডোনার ফাণ্ডে অনুদান দেবার সম্মতি জ্ঞাপন করেন। কেন্দ্রীয় কমিটির সারথি ছাড়াও জেলা ও মহানগর কমিটির সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকগণ থেকে কেন্দ্রীয় ডোনার ফাণ্ডে প্রতি মাসে বাধ্যতামূলক ৩০০ টাকা করে অনুদান সংগ্রহের প্রস্তাব গৃহীত হয় এবং কেন্দ্রীয় কমিটির সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক শ্রী পুলক চক্রবর্তীকে ডোনার ফাণ্ড সংগ্রহের দায়িত্ব দেয়া হয়। কিন্তু সভাপতি সহ কেন্দ্রীয় কমিটির কয়েকজন নির্বাহী সারথি ছাড়া কেউ এব্যাপারে এখনো সাড়া দেননি। তিনি ডোনার ফাণ্ডে অনুদান দেবার জন্য যারা প্রতিশ্র“তি দিয়েছেন, তাদেরকে অনুদান দেবার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানান। এছাড়া জেলা কমিটির সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকবৃন্দও যাতে সার্বিক সহযোগিতা করেন, সেজন্যও অনুরোধ জানান।

 

৯.২ জেলা সফর নিয়ে আলোচনা এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ ঃ

 

তৃণমূল পর্যায়ের সারথিদের সাথে যোগাযোগ বাড়ানো এবং সাংগঠনিক কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করার জন্য প্রতি মাসে কেন্দ্রীয় কমিটির এক বা একাধিক টীম জেলা সফরে যাবার ব্যাপারে গত সভায় সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছিল। কিন্তু নানা কারণে সেটা বাস্তবায়িত হয়নি। জেলা সফরের ব্যাপারে সমন্বয় সাধনের জন্য গত সভায় শ্রী পলাশ নাথ এবং শ্রী লোকনাথ ভৌমিককে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল। তারা দুজন যথারীতি সে দায়িত্ব পালন করে যাবেন। তারা কেন্দ্রীয় কমিটির উপদেষ্টা শ্রী লিটন পাল, সভাপতি শ্রী বাবুল পাল, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শ্রী সঞ্জয় ভৌমিক, কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি এবং ঢাকা মহানগর কমিটির সভাপতি শ্রী রতন চন্দ্র পাল-এর সাথে আলাপ করে দ্রুত জেলা সফরের তারিখ নির্ধারণ করবেন। প্রথমেই সাতক্ষীরা জেলা সফরে যাবার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

 

৯.৩ ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলায় শারদাঞ্জলি ফোরামের কার্যক্রম প্রসংগেঃ

 

এব্যাপারে কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি শ্রী বাবুল চন্দ্র পাল বলেন যে, ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলায় শারদাঞ্জলি ফোরামের অনেকগুলো গীতা নিকেতন আছে। ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলায় একটি আহ্বায়ক কমিটিও গঠিত হয়েছিল। একটি বিশেষ কারণে দীর্ঘদিন কমিটির সারথিদের সাথে যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। তিনি বলেন যে, কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি এবং ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলা আহ্বায়ক কমিটির সারথি শ্রী কৃষ্ণকান্ত দেবনাথ কিছুদিন পূর্বে তাকে ফোনে ব্রাহ্মণবাড়ীয় আসার আমন্ত্রণ জানান। সেখানে জেলা কমিটি যাতে সক্রিয় হয় এবং গীতা নিকেতনগুলো যাতে যথাযথভাবে পরিচালিত হয়, সেজন্য ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলায় সফরের গুরুত্ব সভাকে অবহিত করেন। সভায় শ্রী কৃষ্ণকান্ত দেবনাথের সাথে এব্যাপারে যোগাযোগ রক্ষার জন্য কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতিকে দায়িত্ব দেয়া হয়। সময় ও সুযোগমত কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে কেন্দ্রীয় কমিটির সারথিবৃন্দ ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলায় সফরে যাবার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

 

এছাড়া শ্রী নিহার বিশ্বাসের সুপারিশের প্রেক্ষিতে মালদ্বীপ প্রবাসী শ্রী রনি নন্দীকে শারদাঞ্জলি ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সারথি করার প্রস্তাব সর্মসম্মতভাবে গৃহীত হয়।

 

এরপর সম্মানিত সভাপতি শ্রী বাবুল পাল তার সমাপনী বক্তৃতায় উপস্থিত সকল সারথিকে সভায় উপস্থিত হওয়ায় এবং তাদের সুচিন্তিত মতামত প্রদান করে সভায় অনেকগুলো গরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেবার ব্যাপারে সহযোগিতা করায় ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন যে, কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি হিসেবে এই তিন বছর দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে বিচিত্র অভিজ্ঞতা হয়েছে। আবার সভাপতি হিসেবে যে দায়িত্ব পালন করার কথা নয়, সে দায়িত্বও তাকে নিতে হয়েছে। পিয়ন, কেরাণীর কাজ থেকে শুরু করে অনেক দায়িত্ব তাকে পালন করতে হচ্ছে। এপ্রসংগে তিনি কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি শ্রী অজিত রায়ের বক্তব্যে প্রসংগে টেনে বলেন যে, এটা সত্য যেকোন সভায় সভার আলোচ্য বিষয়সমূহ নিয়ে সাধারণ সম্পাদক উপস্থাপন করবেন। কিন্তু ফোরামের স্থায়ী অফিস না থাকায় এবং অন্যান্য পদগুলো যথাযথভাবে কার্যকরী না-হওয়ায় সভার এজেন্ডা প্রস্তুত করা, সভা শেষে সভার কার্যবিবরণী তৈরি করা সহ ফোরামের প্রতিটি কাজই তাকে সম্পাদন করতে হয় এবং ফোরাম সংক্রান্ত সকল নথি তার কাছে সংরক্ষিত রাখতে হয়। তাই সাধারণ সম্পদককে হঠাৎ করে এজেন্ডাভিত্তিক আলোচনার সূত্রপাত করতে দেয়া হলে সে নিজেই বিব্রতর অবস্থায় পড়ে যাবে। তিনি আশা করেন, আগামীতে যে নতুন কমিটি হবে, গুরুত্বপূর্ণ পদগুলো সক্রিয় হবে। তাতে সভাপতি যে হোক না কেন, তার উপর চাপ কমে যাবে। তিনি আরও বলেন যে, গীতা শিক্ষাকে অগ্রাধিকার দিয়ে ফোরামের বহুমাত্রিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে হবে। আজকের সভায় গীতা শিক্ষা সংক্রান্ত যে সিদ্ধান্তগুলো নেয়া হয়েছে, সেগুলো ধাপে ধাপে বাস্তবায়ন করতে হবে। গীতা বোর্ডের প্রাক্তন নির্বাহী সচিব শ্রী পিয়াল শর্মাকে গীতা শিক্ষা সংক্রান্ত পূর্বের তথ্যগুলো গীতা বোর্ডের মহাসচিবের দপ্তরে এসে দিয়ে যাবার ব্যাপারে সহযোগিতা করার জন্য চট্টগ্রাম জেলা কমিটির সভাপতি শ্রী অজিত শীলকে অনুরোধ জানানো হবে। কেন্দ্রীয় ডোনার ফান্ড কার্যকর করতে হবে। জেলা কমিটিগুলোর সাথে সমন্বয় করে তৃণমূলের সারথিদের সাথে আরও যোগাযোগ বাড়াতে হবে। কাজ করতে গিয়ে ভুল হবে, সে ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। সমালোচনা হবে, কিন্তু সে সমালোচনা যেন বাড়াবাড়ি পর্যায়ে না-যায়, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। অতি সমালোচনার কারণে সারথিদের কাজ করার মনোবল নষ্ট করে দেবে। ফেসবুকে সমালোচনা না-করে সারথিদের কারো কোন পরামর্শ বা অভিযোগ থাকলে সভায় এসে উপস্থাপন করার অনুরোধ জানান। সামনে ত্রিবার্ষিক সম্মেলন। এই সম্মেলনকে সফল করার জন্য শ্রী রতন পালের নেতৃত্বে একটি শক্তিশালী আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। আশাকরি তিনি তার অভিজ্ঞতার আলোকে সবার সহযোগিতা নিয়ে সুন্দর এবং সফল একটি সম্মেলন উপহার দেবেন। বর্তমান কমিটির মেয়াদ আগামী ৩১ অক্টোবর শেষ হয়ে যাবে। নতুন কমিটি গঠনের জন্য শ্রী রতন পালের নেতৃত্বে একটি শক্তিশালী আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। আহ্বায়ক কমিটি সবকিছু চুলচেরা বিশ্লেষণ করে, গত তিন বছরে কাজের মূল্যায়ন করে দক্ষ, অভিজ্ঞ এবং নিবেদিতপ্রাণ সারথি সহ তরুণ সারথিরা নতুন কমিটিতে স্থান পাবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন। পরিশেষে শারদাঞ্জলি ফোরামের সারথিদের মঙ্গল কামনা করে সভাকে সাফল্যমন্ডিত করার জন্য উপস্থিত সারথিদের ধন্যবাদ জানিয়ে আজকের জরুরী সভার সমাপ্তি ঘোষণা করেন।

 

বাবুল চন্দ্র পাল

সভাপতি

শারদাঞ্জলি ফোরাম কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি

Print Friendly, PDF & Email

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Translate »