জুলাই ২৯, ২০১৬ তারিখে অনুষ্ঠিত জরুরি সভার কার্যবিবরণী

13895376_914236792039130_7290599082897306641_n

13873154_913092802153529_1057863662680979220_n 13876629_913093352153474_3377403461038182931_n 13895256_913092905486852_1370836793188939563_n  13669697_913092985486844_5006692516912667365_n 13680536_913093105486832_4039633234819199605_n 13681038_913092945486848_987483335242872494_n 13872675_913093188820157_5186444399882823460_n 13876629_913093352153474_3377403461038182931_n

শারদাঞ্জলি ফোরাম
অস্থায়ী কেন্দ্রীয় কার্যালয়
মল্লিক টাওয়ার, চিত্তরঞ্জন এভিনিউ, ঢাকা

বিষয় – জুলাই ২৯, ২০১৬ তারিখে অনুষ্ঠিত জরুরি সভার কার্যবিবরণী।

গত মার্চ ২৯, ২০১৬ ইং শুক্রবার সকাল ১১ঃ০০ টায় শারদাঞ্জলি ফোরাম-এর অস্থায়ী কেন্দ্রীয় কার্যালয় চিত্তরঞ্জন এভিনিউ, মল্লিক টাওয়ারের ৯ম তলায় দিকদর্শন প্রকাশনী লিমিটেড-এর সেমিনার কক্ষে শারদাঞ্জলি ফোরাম কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি উদ্যোগে এক জরুরী সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সভায় সভাপতিত্ব করেন কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সম্মানিত সভাপতি শ্রী বাবুল চন্দ্র পাল। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর কমিটির সভাপতি শ্রী রতন চন্দ্র পাল। সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করেন শারদাঞ্জলি ফোরাম-এর যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বাবু পলাশ চন্দ্র নাথ।
সঞ্চালক শ্রী পলাশ নাথ উপস্থিতিত সকল সারথিকে স্বাগতঃ জানিয়ে আজকের জরুরী সভার কার্যপ্রণালিসমূহ উত্থাপন করেন। তারই ধারাবাহিকতায় কার্যপ্রণালিসমূহ নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয় এবং কার্যপ্রণালির আলোকে আলোচনা শেষে নিুোক্ত সিদ্ধান্তসমূহ গৃহীত হয় .

১.০ সভার প্রারম্ভে আজকের সভার সভাপতিসহ অতিথিদের আসন গ্রহণ এবং গীতা পাঠ ঃ

সভার প্রারম্ভে আজকের সভার সভাপতি শ্রী বাবুল চন্দ্র পাল, প্রধান অতিথি শ্রী রতন চন্দ্র পাল, বিশেষ অতিথি শ্রী লিটন চন্দ্র পাল, শ্রী অজিত কুমার শীল, শ্রী দীপক বণিক এবং শ্রীমতি অশ্র“ চৌধুরী সভার মূল মঞ্চে আসন গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির প্রচার সম্পাদক বাবু পিয়াল শর্মা গীতা পাঠ করেন।

২.০ গত মে ৬, ২০১৬ ইং তারিখে অনুষ্ঠিত সভার কার্যবিরণী নিয়ো আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণঃ

গত মে ৬, ২০১৬ ইং তারিখে অনুষ্ঠিত সভার কার্যবিবরণী নিয়ে অদ্যকার সভায় কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শ্রী সঞ্জয় ভৌমিক সভায় উত্থাপন করেন। উত্থাপন শেষে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সভাপতি শ্রী বাবুল চন্দ্র পাল উপস্থিত সারথিদের কার্যবিবরণী অনুমোদনের ব্যাপারে কারো কোন আপত্তি আছে কিনা জানতে চান। কারো কোন আপত্তি না থাকায় সর্বসম্মত সিন্ধান্ত মোতাবেক গত সভার কার্যবিবরণী অনুমোদিত হয়।

৩.০ গত মার্চ ১০, ২০১৬ ইং তারিখে অনুষ্ঠিত সভায় শারদাঞ্জলি গীতা নিকেতন বোর্ড গঠন এবং কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সভাপতির পক্ষে কাজ করার জন্য মুখপাত্র নির্বাচনের গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুমোদনের ব্যাপারে আলোচনা এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণঃ

গত মার্চ ১০, ২০১৬ ইং তারিখে অনুষ্ঠিত সভায় শারদাঞ্জলি গীতা নিকেতন বোর্ড গঠন এবং কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সভাপতির পক্ষে কাজ করার জন্য মুখপাত্র নির্বাচনের গৃহীত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছিল। গত মে ৬, ২০১৬ ইং তারিখে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ কারণে উপরোক্ত সিদ্ধান্তগুলো অনুমোদন দেয়া হয়নি। অদ্যকার সভায় পুনরায় কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সভাপতি শ্রী বাবুল চন্দ্র পাল উপস্থিত সারথিদের শারদাঞ্জলি গীতা নিকেতন বোর্ড গঠন এবং কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির জন্য সভাপতির পক্ষে কাজ করার জন্য মুখপাত্র নির্বাচনের গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুমোদনের ব্যাপারে কারো কোন আপত্তি আছে কিনা জানতে চান। কারো কোন আপত্তি না থাকায় সর্বসম্মত সিন্ধান্ত মোতাবেক শারদাঞ্জলি গীতা নিকেতন বোর্ড এবং সভাপতির মুখপাত্র হিসেবে শ্রী পলাশ নাথের নাম সর্বসম্মতভাবে অনুমোদিত হয়।

৪.০ ফোরামের সাংগঠনিক জটিলতা নিরসনে উপস্থিত সারথিদের মতামত গ্রহণঃ

কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সাধারণ সম্পাদক শ্রী শ্যামল দাস এবং সাংগঠনিক সম্পাদক শ্রী দেবাশীষ পালের নেতৃত্বে কিছু সারথি গঠনতন্ত্র লংঘন করে সম্পূর্ণ অনিয়মতান্ত্রিকভাবে কেন্দ্রীয় কমিটির সম্মানিত সভাপতিকে আক্রমণ করে ফেসবুকে একটি লেখা পোষ্টের মাধ্যমে একটি আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেন- যা গুরুতর অপরাধ হিসেবে বিবেচিত। এজন্য তাদের কঠোর শাস্তি প্রাপ্য ছিলো। কিন্তু শারদাঞ্জলি ফোরামের ভবিষ্যৎ এবং অগ্রগতি বিবেচনা করে গত মে ৬, ২০১৬ ইং তারিখের সভায় ঢাকা মহানগর কমিটির সভাপতি শ্রী রতন চন্দ্র পালের অনুরোধে শ্রী শ্যামল দাস সহ অন্যান্যদের সাথে আলোচনা করে একটি সভার আহ্বানের মাধ্যমে তাদের সাথে সমঝোতার দায়িত্ব দেয়া হয়। তারা শ্রী রতন পালের অফিসে এসে এবং পরবর্তীতে টেলিফোন কনফারেন্সের মাধ্যমে অদ্যকার সভায় আসার প্রতিশ্র“তি দিলেও তারা কেউ সভায় উপস্থিত হননি। এতে সভায় উপস্থিত সারথিগণ অত্যন্ত হতাশা এবং ক্ষোভ প্রকাশ করেন। সভায় উপস্থিত সারথিদের বক্তব্যের সারসংক্ষেপ নিচে দেয়া হলোঃ

কেন্দ্রীয় কমিটির সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক শ্রী পুলক চক্রবর্তী তার বক্তব্যে বলেন যে, আজকের জরুরী সভা আহ্বান করা হয়েছিল গুরুত্বপূর্ণ কিছু সিদ্ধান্ত গ্রহণ সহ যারা বিপথে গেছেন তাদের সাথে আপোষ মিমাংসার জন্য। তাদের সংশোধনের একটি সুযোগ দেয়া হয়েছিল, কিন্তু সে সুযোগ তারা গ্রহণ করেননি। তারা সভায় উপস্থিত না-হয়ে নিজেদের অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। তিনি ফোরামের গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে যারা এমন জঘন্য কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকবেন, তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানান। তিনি আরো বলেন যে, সদস্যদের মাসিক চাঁদা মাত্র দশ টাকা। এই টাকা দিয়ে ফোরামের বিভিন্ন খরচ নির্বাহ করা খুবই কঠিন। কেন্দ্রীয় তহবিল বৃদ্ধির জন্য সম্মানিত সভাপতি একটি স্থায়ী ডোনার ফান্ড গঠন নিয়ে গত এক বছর চেস্টা করা যাচ্ছেন। নানা কারণে সেটা সফলতা পায়নি। সভাপতি মহোদয় কেন্দ্রীয় কমিটির যেসব সারথি ব্যবসা এবং চাকরির সাথে সংযুক্ত আছেন এমন ৫০ জন সারথির একটি তালিকা আমাকে দেন। ইতিমধ্যে তালিকা অনুযায়ী অনেককে স্থায়ী ডোনার ফাণ্ডে অনুদান দেবার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। আশার কাথা হলো এতে অনেক সাড়া দিয়েছেন। তিনি উপস্থিত সবাইকে এব্যাপারে সার্বিক সহযোগিতা প্রদানের জন্য অনুরোধ জানিয়ে তার বক্তব্য শেষ করেন। এরপর কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য শ্রী উৎপল ভট্টচার্য্য বক্তব্য প্রদান করেন। তিনি তার বক্তব্যে যারা ফোরামে বিদ্রোহ করেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির দাবি জানান। বিশেষ করে সাংগঠনিক সম্পাদক দেবাশীষ পালের ফেসবুকে ফোরামে বিভাজন সৃষ্টির জন্য নানা উসকানিমূলক লেখা পোষ্ট দেয়া, সভাপতিকে আক্রমণ করে অসম্মানজনক লেখা পোষ্ট দেয়া এবং তার উগ্র স্বভাবের জন্য তার বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানান। কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক শ্রী কল্লোল রায় শারদাঞ্জলির ফোরামের মত একটি নতুন এবং উদীয়মান ফোরামে যারা আজ বিভাজন সৃষ্টি করেছে এবং এখনো যারা ফোরামের ভিতরে বিভাজন সৃষ্টি করছে তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন। এছাড়া তিনি কেন্দ্রীয় কমিটিতে থাকা কিছু অযোগ্য এবং নিষ্কৃয় সারথিকে কমিটি থেকে আগামীতে বাদ দেয়ার প্রস্তাব করেন। কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম-সাংগঠনিক সম্পাদক শ্রী নিকেতন দে তার বক্তব্যে বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে গঠনতন্ত্র মোতাবেক যথাযথ ব্যবস্থা নেয়াসহ শারদাঞ্জলি ফোরামের সারথিদের ফেসবুকে লেখা নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে সভাপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। কিছু কিছু সারথি ফোরামের মধ্যে বিতর্কের সৃষ্টি করার জন্য উস্কানিমূলক লেখা পোষ্ট দেন, কিছু সারথি সভাপতি মহোদয়কে আক্রমণ করে লেখা পোষ্ট দিয়েছেন। এটা খুবই নিন্দনীয়। তিনি প্রস্তাব রাখেন কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতির অনুমতি ছাড়া কেউ যেন সাংগঠনিক বিষয়ে বা কাউকে আক্রমণ করে বা উসকানিমূলক পোষ্ট না দেন। যারা দেবেন তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানান। কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার সম্পাদক তার বক্তব্যে বলেন যে, গীতা নিকেতন পরিচালনা বোর্ডের নির্বাহী সচিব হিসেবে দায়িত্ব দেবার পর থেকে নিয়ম-নীতি অনুসরণ করে তিনি বিভিন্ন জেলায় গীতা সামগ্রী প্রেরণ করে যাচ্ছেন। শ্রী শ্যামল দাস তার কাছে গীতা সামগ্রী চেয়েছিলেন। কিন্তু সেটা নিয়ম মাফিক না-হওয়ায় তিনি তা দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় শ্যামল দাস তাকে হুমকি প্রদান করেন। তিনি ব্যাপারটা সভাকে অবহিত করেন। তিনি আরো বলেন যে, ফোরামে বিভাজনের কারণে ফোরামের কর্মকাণ্ডে কিছুটা স্থবিরতা এসেছে। স্থবিরতা নিরসনে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য উপস্থিত ফোরামের নীতিনির্ধারকদের অনুরোধ জানানা। এছাড়া দেবাশীষ পালের বিরুদ্ধে যেসব গুরুতর অভিযোগ উঠেছে সেটা বিবেচনায় রেখে আজকে সভায় তার বিরুদ্ধে কঠোর সিদ্ধান্ত নেয়ার অনুরোধ জানান। কুমিল্লা মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সারথি শ্রী পিংকু চন্দ তার বক্তব্যের প্রথমে তাকে আমন্ত্রণ জানানো, কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য করা এবং আজকে সভায় বক্তব্য দেবার সুযোগ দেবার জন্য ধন্যবাদ জানান। তিনি কুমিল্লা মহানগর কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠান সফলভাবে আয়োজন এবং কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি, ঢাকা মহানগর কমিটির সভাপতি সহ কেন্দ্রীয় কমিটির সম্মানিত সারথিদের অভিষেক অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার জন্য ধন্যবাদ জানান। তিনি অভিষেক অনুষ্ঠানে কুমিল্লার মহানগরের অনেক সম্মানিত ব্যক্তিবর্গের উপস্থিত থেকে প্রেরণামূলক বক্তব্য দেয়া সহ সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করার জন্য গর্ববোধ করেন। বর্তমানে কেন্দ্রীয় কমিটিতে যে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে আজকের সভায় সিদ্ধান্ত নেয়ার পরামর্শ দেন। ফেসবুকে লেখার ব্যাপারে সারথিরা যেন সতর্কতা অবলম্বন করেন সে ব্যাপারে সর্তক হবার পরামর্শ দেন। এরপর রংপুর থেকে আগত কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সারথি শ্রী অবিনাশ রায় বক্তব্য রাখেন। তিনি রংপুর মহানগর কমিটি গঠন নিয়ে যে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে তা নিরসনে কেন্দ্রীয় কমিটির সহায়তা কামনা করেন। এব্যাপারে তিনি আজকের সভায় একটি সিদ্ধান্ত দেবার অনুরোধ জানানা। এছাড়া ফোরামের সাংগঠনিক কার্যক্রমকে গতিশীল করার জন্য কেন্দ্রীয় কমিটিতে যে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে তা দ্রত সমাধানের ব্যাপারে আজকের সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া জন্য অনুরোধ জানান। এরপর চট্ট্রগ্রাম থেকে আগত কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-আইন বিষয়ক সম্পাদক শ্রীমতি অশ্রু চৌধুরী বক্তব্য প্রদান করেন। তিনি তার বক্তব্যে যারা ফোরামে বিভাজন সৃষ্টি করেছে তাদের বিরুদ্ধে গঠনতন্ত্র মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়ার প্রস্তাব করেন। এছাড়া তিনি বলেন যে, কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি অত্যন্ত নরম মনের মানুষ। সভাপতিকে ফোরামের অগ্রগতির কথা চিন্তা করে কঠোর হবার অনুরোধ জানান। এছাড়া দেবাশীষ পাল সম্পর্কে তিনি উপস্থিত সারথিদের অভিযোগকে আমলে নিয়ে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানান। তিনি বলেন যে, আজ দেবাশীষ পাল সভায় উপস্থিত থাকলে তাকে তিনি এজন্য জবাবদিহি করতে বাধ্য করাতেন। এরপর চট্টগ্রাম জেলা কমিটির সম্মানিত উপদেষ্টা শ্রী কালীপদ ঘোষ তার মূলবান বক্তব্য প্রদান করেন। তিনি বলেন যে, আমরা সনাতনী সম্প্রদায় এমনিতেই নানা প্রতিকূলতার মধ্যে বসবাস করছি। এরমধ্যে শারদাঞ্জলি ফোরামের মত একটি শিশু ফোরামে বিভাগজন সৃষ্টি হওয়া খুবই দুঃখজনক। তিনি বিভাজন মিটিয়ে সুন্দরভাবে যাতে ফোরামে পরিচালিত হয় সেজন্য তিনি আকুল আবেদন জানান। বক্তৃতার এক পর্যায়ে তিনি অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন। তিনি ফোরামের সকল ধর্মীয় এবং মানবিক কাজে নিজেকে মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত নিয়োজিত রাখার অঙ্গীকার করেন। এরপর কেন্দ্রীয় কমিটির সম্মানিত উপদেষ্টা এবং নারায়ণগঞ্জ মহানগর হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি শ্রী লিটন পাল বক্তব্য রাখেন। তিনি সম্প্রতি তার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে বলেন যে, সেখানে তিনি কয়েকজনের সাথে বৈঠক করেছেন। শ্রী পল্লব সরকারের সাথে তিনি দেখা করে দীর্ঘ বৈঠক করেছেন। আরো কয়েকজনের সাথে তার সাক্ষাৎ এবং কথা হয়েছে। সবাই শারদাঞ্জলি ফোরামের ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছেন এবং সার্বিক সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস দিয়েছেন। তারা এটাও বলেছেন যে, তারা ফোরামের সকল কর্মকাণ্ডে সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত, তবে সব কিছুতেই স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা এবং আর্থিক অনুদানের টাকা যথাযথভাবে যেন কাজে লাগানো হয় এব্যাপারে তারা প্রতিশ্র“তি চেয়েছেন। শারদাঞ্জলি ফোরামের ধর্মীয় এবং মানবিক কর্মকাণ্ডের প্রতি অকৃষ্ট হয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী শ্রী দীনেশ শর্মা দুইশত ডলার অর্থাৎ বাংলাদেশী মুদ্রায় ১৫,৬০০ টাকা অনুদান দিয়েছেন। এজন্য দীনেশ শর্মার প্রতি তিনি কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি আরো বলেন যে, আসন্ন শারদাঞ্জলি ফোরামের উদ্যোগে যে টিশার্ট তৈরি হবে তিনি তার ফ্যাক্টরি থেকে টিশার্টগুলো তৈরি করার প্রতিশ্র“তি দেন। এছাড়া যেসব মেধাবি ছাত্র-ছাত্রী স্কলারশীপ নিয়ে বিদেশে যেতে চান তাদের সার্বিক সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস দেন। উপস্থিত সারথিরা তার এই মানবিক উদ্যোগ এবং শারদাঞ্জলি ফোরামের প্রতি তার নিঃস্বার্থ সমর্থন হাততালি দিয়ে অভিনন্দিত করেন। এরপর কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সারথি দিলীপ কুমার সাহা বক্তব্য প্রদান করেন। তিনি ফোরামে বিভাজনকারী সারথিদের বিরুদ্ধে গঠনতন্ত্র মোতাবেক কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ করেন। ভবিষ্যতে কোন সারথি যেন এধরনের অনৈতিক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত না-থাকতে পারে এজন্য আজকের সভায় একটি স্টিয়ারিং কমিটি গঠনের প্রস্তাব করেন। এছাড়া শারদাঞ্জলি ফোরামের উদ্যোগের একটি “সারথি কল্যাণ ফাণ্ড” গঠনের প্রস্তাব করেন। এই ফাণ্ডে জমাকৃত অর্থ দিয়ে দরিদ্র সনাতনী ছাত্র-ছাত্রীদের ফোরামের পক্ষ থেকে লেখা-পড়ার খরচ নির্বাহের ব্যবস্থা করা যাবে। তার এই প্রস্তাব উপস্থিত সারথিগণ হাততালি দিয়ে সমর্থন জানান। এরপর কুমিল্লা থেকে আগত শারদাঞ্জলি ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি এবং কুমিল্লা মহানগর কমিটির সভাপতি শ্রী দীপক কুমার বণিক বক্তব্য রাখেন। তিনি কেন্দ্রীয় কমিটির সকল সিদ্ধান্তের সাথে সহমত পোষণ করার অঙ্গীকার করেন এবং বিদ্রোহী সারথিদের বিরুদ্ধে আজকে সভায় সিদ্ধান্ত গ্রহণের অনুরোধ জানান। তিনি চট্টগ্রামের একটি পরিবারিক অনুষ্ঠানে যোগ দেবার জন্য উপস্থিত সারথিদের থেকে বিদায় নিয়ে চলে যান। এরপর কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি শ্রী অজিত রায় তার সুচিন্তিত মতামত প্রকাশ করেন। তিনি কেন্দ্রীয় কমিটির সারথিদের পূর্ণাঙ্গ তথ্য কম্পিউটারে সংরক্ষণের পরামর্শন দেন। এছাড়া যারা গঠনতন্ত্রবিরোধ কর্মকাণ্ডের সাথে লিপ্ত রয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে আজকে সভায় যথাযথ সিদ্ধান্ত নেয়ার অনুরোধ জানান। এরপর অবসরপ্রাপ্ত এস.পি(সি.আই.ডি) শ্রী দীপক চন্দ্র বৈদ্য বক্তব্য প্রদান করেন। তিনি শারদাঞ্জলি ফোরামের সকল ধর্মীয় এবং মানবিক কর্মকাণ্ডে তার পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস প্রদান করেন। এরপর চট্টগ্রাম থেকে আগত শারদাঞ্জলি ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি এবং চট্টগ্রাম জেলা কমিটির সভাপতি শ্রী অজিত কুমার শীল বক্তব্য প্রদান করেন। তিনি দীর্ঘ সময় সারগর্ব বক্তব্য দেন। তিনি কেন্দ্রীয় কমিটি, জেলা কমিটি, মহানগর কমিটি, উপজেলা, থানা, ইউনিয়ন কমিটিগুলো কী ফরমার্টে হবে এব্যাপারে বর্তমান যে গঠনতন্ত্র আছে, তাতে সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা নেই বলে জানান। বর্তমানে গঠনতন্ত্রে কেন্দ্রীয়, জেলা এবং মহানগর কমিটির নির্বাহী সদস্য সংখ্যা একই রকম। এটা পরিবর্তন করা প্রয়োজন। কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সংখ্যার সাথে জেলা এবং মহানগর কমিটির কিছুটা পার্থক্য থাকা প্রয়োজন বলে তিনি মহামত দেন। এছাড়া তিনি অভিযোগ করেন যে, কেন্দ্রীয় কমিটিতে তাকে প্রথমে সিনিয়র সহ-সভাপতি পদ দিলেও পরবর্তীতে সহ-সভাপতি পদে রাখা হয়েছে। এছাড়া বর্তমানে কেন্দ্রীয় কমিটিতে যে বিভাজন সৃষ্টি হয়েছে সেটা দ্রুত নিরসনের পরামর্শ দেন। তিনি আরো বলেন যে, যারা অপরাধ করবে অনেক সময় স্রস্টাই তাদের শাস্তি দিয়ে থাকেন। এ প্রসঙ্গে তিনি দেবাশীষ পালের উদাহরণ দেন। তার নেতিবাচক কর্মকাণ্ডের জন্য ইতিমধ্যে ভগবানই তাকে শাস্তির ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। তিনি ফেসবুকে ছেলেদের ঝগড়ার ব্যাপারটাও উল্লেখ করেন। তিনি বলেন যে, আমি নিজে ফেসবুক ব্যবহার করি না, এ সম্পর্কে আমার কোর ধারণা নাই। তবে মাঝে মাঝে চট্টগ্রামের তরুণ সারথিরা ফেসবুকে ঝগড়া করে আমার কাছে বিচার নিয়ে আসে। আমি অনেক ক্ষেত্রে সমাধান করে দিই। ফেসবুক যাতে কোন উত্তেজনামূলক লেখা পোষ্ট না দেয়া হয় এব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থানার পরামর্শ দেন। এরপর কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি এবং ঢাকা মহানগর কমিটির সভাপতি শ্রী রতন চন্দ্র পাল গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য দেন। তিনি বলেন যে, শারদাঞ্জলি ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক শ্রী শ্যামল দাস এবং সাংগঠনিক সম্পাদক শ্রী দেবাশীষ পাল সহ কিছু সারথি বিভাজন সৃষ্টি করেছিল। গত সভায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার একটি প্রস্তাব ছিলো। কিন্তু ফোরামের সার্বিক মঙ্গল চিন্তা করে তাদের বিরুদ্ধে কোন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না-নিয়ে তিনি নিজে তাদের সাথে আপোষ-মিমাংসার দায়িত্ব নেন। তিনি ফোনে শ্যামল দাস, দেবাশীষ পাল এবং লিটন চৌধুরীকে ঢাকায় তার অফিসে আসার আমন্ত্রণ জানান। তার আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে তারা তার অফিসে আসনে। তাদের সাথে সফল আলোচনা এবং সম্মতির ভিত্তিতে আজ সভার আয়োজন করা হয়। আজকের সভায় তাদের সাথে আলোচনার পর একটি সুন্দর মিমাংসার সম্ভাবনা ছিলো। কিন্তু তারা কেউ সভায় উপস্থিত হয়নি। এজন্য তিনি ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন যে, এমন সুযোগ গ্রহণ না-করে তারা খুবই অন্যায় করেছে। আজকের সভায় এব্যাপারে একটি সিদ্ধান্ত নেবার জন্য তিনি আহ্বান জানান। তিনি বলেন যে, গীতা শিক্ষা প্রসার শারদাঞ্জলি ফোরামের একটি মূল আদর্শ। সেই লক্ষ্যে একটি গীতা বোর্ড গঠন করা হয়েছে। তিনি তার প্রকাশনা থেকে ৫ হাজার গীতা ছাপিয়ে দিয়েছেন। গীতা ছাপানো খরচ এসেছে ১,৬৫,০০০.০০ টাকা। তিনি ৮৭,০০০.০০ টাকা গীতা বোর্ড থেকে পেয়েছেন। বাকী ৭৮,০০০.০০ টাকা তিনি নেবেন না বলে সিদ্ধান্ত দেন। তার এই সিদ্ধান্তে উপস্থিত সারথিগণ হাততালি দিয়ে অভিনন্দিত করেন। এছাড়া তিনি আরো একটি প্রস্তাব করেন, গীতা সামগ্রীর সাথে যে খাতা দেয়া হয় সেগুলো বাজার থেকে না-কিনে শুধু কাগজ কিনে নিজ উদ্যোগে “শারদাঞ্জলি গীতা নিকেতন” কভার ছাপিয়ে খাতা তৈরি করে ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে বিতরণের প্রস্তাব দেন। এবং এজন্য তিনি আরও ২৫,০০০.০০ টাকা অনুদান দেবার ঘোষণা দেন। তার এই মহানুভবতায় উপস্থিত সারথিগণ জোর হাততালি দিয়ে অভিনন্দিত করেন। তিনি উপস্থিত সকল সারথিকে সভায় উপস্থিত থাকার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে বক্তব্য শেষ করেন।

৫.০ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সভাপতি কর্তৃক কেন্দ্রীয় তহবিল এবং গীতা শিক্ষা তহবিলের জন্য সারথিদের নিকট থেকে সংগৃহীত অনুদান এবং খরচের সার্বিক তথ্য সভাকে অবহিতকরণ।

কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি সভাপতি শ্রী বাবুল চন্দ্র পাল শারদাঞ্জলি ফোরামের সারথিসহ ফোরামের শুভাকাঙ্খিদের নিকট অনুদান হিসেবে পাওয়া কেন্দ্রীয় ডোনার ফাণ্ড এবং গীতা শিক্ষা তহবিলের হিসাব উপস্থিত সারথিদের নিকট উপস্থাপন করেন।

৫.১ কেন্দ্রীয় ডোনার ফাণ্ডে এপর্যন্ত অনুদান জমা হয়েছে ১,৪৪,৫০০.০০ টাকা। এপর্যন্ত খরচ হয়েছে ৭৫,৪১০.০০ টাকা। উদ্বৃত্ত আছে ৬৯,০৯০.০০ টাকা।

৫.২ গীতা ফাণ্ডে এপর্যন্ত অনুদান জমা হয়েছে ১,২৬,৪০০.০০ টাকা। এপর্যন্ত খরচ হয়েছে ৯২,৩০০.০০ টাকা। উদ্বৃত্ত আছে ৩৪,১০০.০০ টাকা।
৬.০ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির কোষাধ্যক্ষ কর্তৃক সারথিদের চাঁদা আদায়সহ হিসাবের তথ্য সভাকে অবহিতকরণঃ

কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির ইতিমধ্যে কয়েকটি সভা হয়েছে। কিন্তু বর্তমান কোষাধ্যক্ষ শ্রী অলোক বৈদ্য সারথিদের নিকট থেকে আদায়কৃত মাসিক চাঁদার কোন হিসাব উত্থাপন করতে পারেননি। কয়েকমাস পূর্বে সারথিদের থেকে মাসিক চাঁদা আদায় সংক্রান্ত একটি তথ্য তিনি মোবাইল ম্যাসেজে সভাপতি মহোদয়কে দিয়েছিলেন। এতে আনুমানিক তার কাছে ২০,০০০.০০ টাকা জমা আছে। তিনি গত সভা এবং আজকের সভায়ও উপস্থিত হয়নি। উপরন্তু তিনি বিদ্রোহী গ্র“পের সাথে এক হয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। সারথিদের চাঁদা আদায়ের ব্যাপারেও এখন তার কোন তৎপরতা নেই। এসব বিবেচনা করে বিস্তারিত আলোচনা শেষে নিম্মোক্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় ঃ

৬.১ শ্রী অলোক বৈদ্যের সাংগঠনিক নিস্কৃয়তা, বিদ্রোহী গ্রুপের সাথে একাÍতা ঘোষণা করে কাজ করা, বার বার সভায় অনুপস্থিত থাকা এবং হিসাব দিতে ব্যর্থ হওয়ায় তাকে ফোরামের সকল কর্মকাণ্ড থেকে অব্যহতি দেয়া হলো।

৬.২ কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম-সমন্বয়ক শ্রী সুমন দাসকে ভারপ্রাপ্ত কোষাধ্যক্ষের দায়িত্ব দেয়া হলো। তিনি কেন্দ্রীয় কমিটির সারথিদের নিকট থেকে চাঁদা সংগ্রহ করবেন এবং সভাপতির সাথে এব্যাপারে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখবেন। সংগৃহীত চাঁদা তিনি পরবর্তীত সভাপতির নিকট হস্তান্তর করবেন।

৬.৩ কেন্দ্রীয় কমিটির সকল সারথিকে শ্রী সুমন দাসের নিকট মাসিক চাঁদা পরিশোধের অনুরোধ করা হলো।

৭.০ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির স্থায়ী ডোনার ফাণ্ড গঠন নিয়ে আলোচনা এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ। ঃ

শারদাঞ্জলি ফোরাম-এর প্রতিষ্ঠার পর থেকে দেশ-বিদেশে অবস্থানরত নির্দিষ্ট সংখ্যক সারথি এবং শুভানুধ্যায়ির অনুদানে ধর্মীয় এবং মানবিক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়ে আসছে। একটি সংগঠন পরিচালনার জন্য একটি শক্তিশালী তহবিল থাকতে হবে। শক্তিশালী তহবিল না-থাকলে সংগঠনের ধর্মীয়, মানবিক এবং কল্যাণমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা কঠিন হয়ে যায়। শুধুমাত্র সদস্যদের মাসিক চাঁদা দিয়ে সংগঠন পরিচালনা করা যায় না। সংগঠনের যারা স্বচ্ছল সারথিদের সম্মতি সাপেক্ষে একটি স্থায়ী ডোনার ফাণ্ড আলোচনা করা হয়। এব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা শেষে নিম্মোক্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হয় ঃ

৭.১ শারদাঞ্জলি ফোরাম-এর কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির যেসব সদস্য আর্থিকভাবে স্বচ্ছল, তাদের থেকে প্রতি মাসে তাদের সম্মতিক্রমে ১০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১০০০ টাকা পর্যন্ত অনুদান সংগ্রহের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

৭.২ ডোনার ফাণ্ড সংগ্রহের জন্য কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক শ্রী পুলক চক্রবর্তীকে দায়িত্ব দেয়া হয়। তিনি কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সভাপতি শ্রী বাবুল চন্দ্র পাল-এর সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রেখে ফান্ড সংগ্রহ করবেন এবং সংগহকৃত অর্থ মাসে মাসে সভাপতির নিকট জমা দিবেন। সভাপতি সেই অর্থ একটি নির্দিষ্ট ব্যাংক হিসাবে জমা রাখবেন।

৮.০ ফোরামের শৃঙ্খলা ভঙ্গকারী সারথিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং সময়ে সময়ে ফোরামের প্রয়োজনে গঠনতন্ত্র সংশোধনের জন্য ৯ সদস্য বিশিষ্ঠ স্টিয়ারিং কমিটি গঠন নিয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণঃ
শারদাঞ্জলির ফোরামের যেসব সারথি গঠনতন্ত্র বিরোধী কার্যকলাপের সাথে জড়িত আছেন এবং ভবিষ্যতে থাকবেন, তাদের বিরুদ্ধে যাতে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয়া যায় এবং যেহেতু ফোরামের কর্মকাণ্ড দ্রুত বিস্তার লাভ করছে, ফোরামের প্রয়োজনে মাঝে মাঝে যাতে গঠনতন্ত্রে সংশোধন এবং সংযোজনের প্রয়োজন হয়, তাই এব্যাপারে সভায় বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। আলোচনা শেষে নিচের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়ঃ
৮.১ অদ্যকার সভায় কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাহী সারথি সমন্বয়ে ৯ সদস্যের একটি স্টিয়ারিং কমিটি গঠন করা হয়। সারথিদের নাম নিচে দেয়া হলো ঃ
১) শ্রী লিটন চন্দ্রু পাল
২) শ্রী রতন চন্দ্র পাল
৩) শ্রী অজিত কুমার রায়
৪) শ্রী সঞ্জয় ভৌমিক
৫) শ্রী পলাশ চন্দ্র নাথ
৬) শ্রী পুলক চক্রবর্তী
৭) শ্রী দিলীপ কুমার সাহা
৮) শ্রী দেবাশীষ পাল(দেবু)
৯) শ্রী দুলাল মজুমদার
৮.২ কেন্দ্রীয় কমিটির কোন সারথি কোন অপরাধ করলে উপরোক্ত কমিটির সদস্যগণ সভায় উপস্থিত থেকে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত অথবা কমিটির সদস্যদের মধ্যে সিদ্ধান্ত গ্রহণে দ্বিমত থাকলে সংখ্যগরিষ্টের ভোটের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেবেন। তারা সারথিদের অপরাধের গুরুত্ব বিবেচনা করে সারথিদের নোটিশ দিয়ে অথবা বিনা নোটিশে শাস্তি দিতে পারবেন।
৮.৩ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি পদাধিকার বলে স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য থাকবেন। তিনি সভায় তাঁর মতামত দিতে পারবেন। তবে ভোট দিতে বা সিদ্ধান্ত নিতে প্রভাবিত করতে পারবেন না। স্টিয়ারিং কমিটি যে সিদ্ধান্ত নেবে সভাপতি সেটা অনুমোদন দেবেন। সভাপতির অনুমোদনের পর শৃঙ্খলা ভঙ্গকারী সারথিদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত ব্যবস্থা নেয়া হবে। সিদ্ধান্তগুলো ফেসবুকে এবং চিঠির মাধ্যমে শাস্তিপ্রাপ্ত সারথিদের জানিয়ে দেয়া হবে।
৮.৪ উক্ত কমিটি প্রয়োজনে গঠনতন্ত্রে কোন সংশোধন, সংযোজনের প্রয়োজন হলে সভার মাধ্যমে সেটা করতে পারবেন। স্টিয়ারিং কমিটি যে সিদ্ধান্ত নেবে সভাপতি সেটা অনুমোদন দেবেন।
৯.০ শারদাঞ্জলি ফোরামের কতিপয় সারথি ফেসবুকে কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সহ অন্যান্য সারথিদের নিয়ে মানহানিকর লেখা পোষ্ট দেয়া নিয়ে আলোচনা এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণঃ
দীর্ঘদিন ধরে লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, ফোরামের কিছু সারথি কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সহ অন্যান্য সারথিদের বিরুদ্ধে ফেসবুকে মানহানিকর লেখা পোষ্ট দিচ্ছেন এবং কিছু সারথি উক্ত লেখায় উস্কানিমূলক মন্তব্য করে থাকেন। এছাড়া অনেক সময় কিছু সারথি সাংগঠিক বিষয় নিয়ে সভার কোন সিদ্ধান্ত ছাড়া ফেসবুকে পোষ্ট দিয়ে থাকেন। এতে সাধারণ সারথিগণের মধ্যে বিরুপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হচ্ছে। এসব বন্ধের জন্য বিস্তারিত আলোচনা শেষে নিুোক্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়ঃ
৯.১ সভাপতির অনুমতি ছাড়া সাংগঠনিক কোন বিষয়ে কোন সারথি কোন লেখা ফেসবুকে পোষ্ট দিতে পারবেন না।
৯.২ সভাপতি সহ কোন সারথির বিরুদ্ধে কোন মানহানিকর লেখা পোষ্ট দিতে পারবেন না।
৯.৩ কোন ধর্মকে কটাক্ষ্য করে কোন লেখা পোষ্ট দেয়া যাবে না।
৯.৪ কোন সারথি উস্কানিমূলক কোন লেখা পোষ্ট দিতে পারবে না। এবং কোন সারথি কারো লেখায় কোন বাজে মন্তব্য করতে পারবে না।
৯.৫ উপরোক্ত সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কোন সারথি অবস্থান নিয়ে স্টিয়ারিং কমিটি সভা আহ্বান করে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে পারবেন বলে আজকের সভায় সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
৯.৬ রংপুর মহানগর কমিটি গঠন নিয়ে বিভাজন সৃষ্টি হওয়ায় রংপুর মহানগর আহ্বায়ক কমিটি বাতিল করায় কমিটির প্রধান আহ্বায়ক শ্রী নিরঞ্জন রায় এবং সদস্য সচিব শ্রী দীপু রায় কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতিকে আক্রমনাত্মক ভাষায় ফেসবুকে লেখা পোষ্ট দেয়ায় তাদের দুজনকে আজকের সভায় সতর্ক করে দেয়া হলো। ভবিষ্যতে এরকম নেতিবাচক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
১০.০ কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম-সাংগঠনিক সম্পাদক শ্রী মহাদেব রায়-এর ব্যাপারে আলোচনা এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণঃ
কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম-সাংগঠনিক সম্পাদক শ্রী মহাদেব রায় দীর্ঘদিন ধরে শারদাঞ্জলি ফোরামের কোন কর্মকাণ্ডেও দীর্ঘদিন অংশগ্রহণ করছেন না। তিনি অপরাধের সাথে জড়িত থাকায় জেলও খেটেছেন। এসব বিবেচনা করে আজকে সভায় বিস্তারিত আলোচনা শেষে তার ব্যাপারে নিম্মোক্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়ঃ
১০.১ কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম-সাংগঠনিক সম্পাদক শ্রী মহাদেব রায় শারদাঞ্জলি ফোরামের গঠনতন্ত্র বিরোধী কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকায় তাকে যুগ্ম-সাংগঠনিক সম্পাদক পদসহ সারথির পদ থেকে সম্পূর্ণ অব্যাহতি দেয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
১০.২ তিনি অদ্য অদ্য জুলাই ২৯, ২০১৬ ইং তারিখ থেকে শারদাঞ্জলি ফোরামের কোন কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকতে পারবে না।
১১.০ কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শ্রী দেবাশীষ পাল ফেসবুকে সভাপতিকে অসম্মান করে ফেসবুকে লেখা পোষ্ট দেয়া, সভাপতিকে ফোরামের কার্যক্রম বন্ধ রাখার হুমকি দেয়া এবং ফোরামের বিভাজন সৃস্টি সহ নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকায় তার ব্যাপারে আলোচনা এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণঃ
কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শ্রী দেবাশীষ পাল ফেসবুকে কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতিকে অসম্মান করে ফেসবুকে লেখা পোষ্ট দিয়েছেন। এমনকি সভাপতিকে ফোনে ফোরামের কার্যক্রম বন্ধ রাখার হুমকি পর্যন্ত দিয়েছেন- যা সম্পূর্ণভাবে গঠনতন্ত্র বিরোধী। এছাড়াও বর্তমানে ফোরামের বিভাজন সৃস্টি হয়েছে, এজন্য তিনি অনেকক্ষেত্রে দায়ী। তার এসব উগ্র মানসিকতা এবং ফোরাম বিরোধী কর্মকাণ্ডের জন্য বিস্তারিত আলোচনা শেষে তার বিরুদ্ধে নিম্মোক্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়ঃ
১১.১ শ্রী দেবাশীষ পালকে শারদাঞ্জলি ফোরামের গঠনতন্ত্র বিরোধী কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকায় সাংগঠনিক সম্পাদক পদসহ সারথির পদ থেকে সম্পূর্ণ অব্যাহতি দেয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
১১.২ তিনি অদ্য জুলাই ২৯, ২০১৬ ইং তারিখ থেকে শারদাঞ্জলি ফোরামের কোন কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকতে পারবে না।
১১.৩ অদ্য জুলাই ২৯, ২০১৬ ইং তারিখ থেকে যুগ্ম-সাংগঠনিক সম্পাদক শ্রী নিকেতন দে-কে ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব দেয়া হলো। তিনি গঠনতন্ত্র মোতাবেক সাংগঠনিক সম্পাদকের সকল দায়িত্ব পালন করবেন।
১২.০ টিশার্ট তৈরি এবং পূজা ম্যাগাজিন প্রকাশনা নিয়ে আলোচনা এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণঃ
আসন্ন দুর্গা পূজা উপলক্ষে তরুণ সারথিদের আগ্রহের কথা বিবেচনা করে টিশার্ট তৈরি এবং পূজা ম্যাগজিন প্রকাশনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। আলোচনা শেষে নিুোক্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়ঃ
১২.১ ১৪২৩ বঙ্গাব্দে অনুষ্ঠিতব্য দুর্গা পূজায় ১০০০ র্টিশার্ট তৈরি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এব্যাপার কেন্দ্রীয় কমিটির সম্মানিত উপদেষ্টা শ্রী লিটন চন্দ্র পাল সার্বিক সহযোগিতা দেবেন বলে সভায় প্রতিশ্র“তি দেন।
১২.২ টিশার্ট তৈরি, ডিজাইন সিলেকশন এবং সারথিদের বিতরণের জন্য কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এবং সভপাতির মুখপাত্র শ্রী পালশ নাথকে দায়িত্ব দেয়া হয়। তিনি পরবর্তীতে একটি শক্তিশালী কমিটি গঠন করে ফেসবুকে সবাইকে জানিয়ে দেবেন।
১২.৩ আসন্ন দুর্গা পূজা উপলক্ষে শারদাঞ্জলি ফোরামের উদ্যোগে ১৫০০ ম্যাগাজিন ছাপানোর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। ম্যাগাজিন প্রকাশনার সার্বিক দায়িত্ব পালন করবেন কেন্দ্রীয় কমিটির সম্মানিত নির্বাহী সারথি শ্রী দিলীপ কুমার সাহা। তাকে সার্বিক সহযোগিতা করবেন শ্রী পলাশ নাথ এবং কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক শ্রী কল্লোল রায়।
১২. ৪ ঢাকা মহানগর কমিটির সম্মানিত সভাপতি শ্রী রতন চন্দ্র পাল-এর দিকদর্শন প্রকাশনা লিঃ থেকে ম্যাগাজিন প্রকাশনার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এব্যাপারে তিনি সার্বিক সহযোগিতা দেবেন বলেন প্রতিশ্র“তি দেন।
১২.৫ গত পূজা ম্যাগাজিনের মত এবারও বাণিজ্যিক বিজ্ঞাপনের পাশাপাশি শারদাঞ্জলি ফোরামের সারথিদের প্রনামীর বিনিময়ে শুভেচ্ছা বিজ্ঞাপন নেবার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। যেসব সম্মানিত সারথি শুভেচ্ছা বিজ্ঞাপন দিতে চান, তারা উপরোক্ত সারথিদের সাথে যোগাযোগ করতে পারবেন।
১২.৬. ম্যাগাজিনের জন্য লেখা পাঠানো ইমেইল ঠিকনা ফেসবুকে সবাইকে জানিয়ে দেয়া হবে।
১৩.০ সাধারণ সম্পাদকের অনুপস্থিতিতে দায়িত্ব পালন নিয়ে আলোচনা এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ ঃ

কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সাধারণ সম্পাদক শ্রী শ্যামল কুমার দাস দীর্ঘদিন বিদেশ অবস্থান করায় এপর্যন্ত কোন সভায় তিনি উপস্থিত ছিলেন না। এছাড়া তিনি গঠনতন্ত্রের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে অবৈধভাবে একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করেছিলেন। ফোরামের সাংগঠনিক স্বার্থের কথা বিবেচনা করে তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। তাকে আজকের সভায় আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিলো। কিন্তু তিনি উপস্থিত হননি। এমতাবস্থায় আজকের সভায় বিস্তারিত আলোচনা শেষে নিচের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়ঃ

১৩.১ সাধারণ সম্পাদকের মত একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকেও শ্রী শ্যামল কুমার দাস এপর্যন্ত কোন সভায় উপস্থিত না-থাকায় এবং আজকে সভায় উপস্থিত না-হওয়ার কারণে তার অনুপস্থিতিতে যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শ্রী সঞ্জয় ভৌমিককে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালনের দায়িত্ব দেয়া হয়।

১৩.২ শ্রী শ্যামল কুমার দাস সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালনে আগ্রহী হলে তার ব্যাপারটি বিবেচনা করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। তবে এজন্য আগামী সভায় তাকে অবশ্যই উপস্থিত থেকে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে হবে।

১৪.০ রংপুর মহানগর কমিটি গঠন ও অন্যান্য প্রসংগে আলোচনা এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণঃ

রংপুর জেলার কার্যক্রম নিয়ে কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি দীর্ঘ এক বছর ধরে কাজ করছেন। তাঁর সাথে সিনিয়র সহ-সভাপতি অভি দত্ত, পলাশ নাথ, সুমন বর্মন সহ কেন্দ্রীয় কমিটির কয়েকজন সারথি কাজ করেছেন। কিন্তু সেভাবে সফলতা আসেনি। পরবর্তীতে নানা বাধা পেরিয়ে শ্রী নিরঞ্জন রায়কে প্রধান আহ্বায়ক এবং শ্রী দীপু রায়কে সদস্য সচিব করে একটি আহ্ব¡ায়ক কমিটি গঠন করা হয়। গত ঈদের পূর্বে মহানগর কমিটি গঠনের উদ্দেশ্যে একটি সভা আহ্বান করা হয়। কিন্তু উক্ত সভায় দুই পক্ষ দুটি মহানগর কমিটি গঠন করে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে বসে। এতে সাধারণ সারথিদের মধ্যে বিরুপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি শ্রী বাবুল পাল এব্যাপারে দুই পক্ষের সাথে কথা বলে আপোষ করার প্রাণান্তকর চেষ্টা করেন। কিন্তু এক পক্ষ আপোষের পক্ষে থাকলেও প্রধান আহ্বায়ক এবং সদস্য সচিব অনড় অবস্থান থাকায় কেন্দ্রীয় কমিটির নীতি নির্ধারকদের সাথে আলাপ করে দুই কমিটি অনুমোদন না-দিয়ে আহ্বায়ক কমিটি বাতিল ঘোষণা করে শ্রী অবিনাশ রায় এবং শ্রী সঞ্জয় সরকার জয়কে নতুন আহ্বায়ক কমিটি গঠনের জন্য কেন্দ্র থেকে সভাপতি শ্রী বাবুল পাল ফেসবুকে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেন। যেহেতু রংপুর থেকে দুজন সারথি উপস্থিত আছেন, তাই আহ্বায়ক কমিটি গঠনের ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা শেষে আজকের সভায় নিম্মোক্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় ঃ

১৪.১ রংপুর মহানগর কমিটি এবং জেলা কমিটি গঠনের জন্য শ্রী অবিনাশ রায় ও শ্রী সঞ্জয় সরকার জয়কে দায়িত্ব দেয়া হলো। তারা দ্রুত একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করবেন। উক্ত আহ্বায়ক কমিটি রংপুরে শারদাঞ্জলি ফোরামের কার্যক্রমকে গতিশীল করার জন্য আগামী এক মাসের মধ্যে একটি শক্তিশালী রংপুর মহানগর এবং জেলা কমিটি গঠন করবেন।

১৪.২ এছাড়া কেন্দ্রীয় কমিটির সম্মানিত উপদেষ্টা শ্রী লিটন চন্দ্র পাল চট্টগ্রাম জেলা কমিটির সম্মানিত উপদেষ্ট শ্রী কালিপদ ঘোষকে কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য করার প্রস্তাব করলে সভায় উক্ত প্রস্তাব সানন্দের সাথে গৃহীত হয়।

১৪.৩ ফোরামের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডকে বিভিন্ন জেলায় প্রসারিত করার প্রয়োজনে কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সারথি সহ সাধারণ সারথি পদে যোগ্যতা অনুযায়ী নির্বাচিত করার জন্য কেন্দ্রীয় কমিটির সম্মানিত সভাপতি শ্রী বাবুল চন্দ্র পালকে একক ক্ষমতা প্রদান করা হয়। তবে তিনি ইচ্ছা করলে কেন্দ্রীয় কমিটির নীতিনির্ধারণী সারথিদের এব্যাপারে পরামর্শ এবং সহায়তা নিতে পারবেন।
১৫.০ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সভাপতি শ্রী বাবুল চন্দ্র পাল-এর সমাপনী ভাষণ এবং সভার সমাপ্তি ঘোষণাঃ
সভাপতি তাঁর বক্তব্যের প্রারম্ভে আজকের গুরুত্বপূর্ণ সভায় বিভিন্ন জেলা থেকে আগত উপস্থিত সকল সারথিকে ধন্যবাদ জানান। তিনি উপস্থিত সম্মানিত সারথিগণের মধ্যে যাঁরা তাঁদের বক্তব্যে গুরুত্বপূর্ণ মতামত ব্যক্ত করেছেন, তাঁদেরও তিনি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। তিনি বলেন যে, আজকের জরুরি সভায় অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। ফোরামের মধ্যে একটি অংশ বিভাজন সৃষ্টি করার কারণে গত কয়েক মাস ধরে ফোরামে কর্মকাণ্ডে কিছুটা স্থবিরতা এসেছিলো। আশাকরি এখন থেকে সেই স্থবিরতা কেটে যাবে এবং ফোরামের সারথিরা আজকের সিদ্ধান্তের আলোকে ধর্মীয় এবং মানবিক কর্মকাণ্ডে নিজেদের আরো বেশি করে সম্পৃক্ত করবেন। শ্রী শ্যামল দাস, শ্রী দেবাশীষ পাল সহ যারা ফোরামে বিভাজন সৃষ্টি করেছিলো তাদের অনুপস্থিতিতে তিনি হতাশা প্রকাশ করেন। ফোরামের মঙ্গলার্থে গত সভায় শ্রী রতন পালকে তাদের সাথে আলোচনা করে আজকের সভায় উপস্থিত থেকে যাতে একটি সুন্দর সমাধান করা যায় সে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিলো। কিন্তু তারা সভায় উপস্থিত থাকার সম্মতি দিয়েও শেষ পর্যন্ত উপস্থিত হননি। যার কারণে কিছু কিছু কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। একটি সংগঠন পরিচালিত হবে সুনির্দিষ্ঠ নিয়মের মধ্যে দিয়ে। সেখানে মত পার্থক্য বা দ্বিমত থাকতেই পারে। কিন্তু সেজন্য সংগঠনকে দ্বিখণ্ডিত করা বা বিভাজন সৃষ্টি করা কোনভাবেই কাম্য হতে পারে না। গীতা বোর্ড এবং সভাপতির মুখপাত্র নির্বাচন করা হয়েছে ফোরামের কর্মকাণ্ডে গতিশীলতা আনায়নের জন্য। এখানে কোন ব্যক্তি স্বার্থ বা গোষ্ঠী স্বার্থ কাজ করেনি। একটি সভা আহ্বানের মাধ্যমে নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতিতে এই সিদ্ধান্তগুলো নেয়া হয়েছে। কারো কোন আপত্তি থাকলে সে সভায় এসে মতামত দিতে পারে। কিন্তু সভাপতির উপর চাপ প্রয়োগ করে নিজের মতকে প্রতিষ্ঠা করা মোটেই উচিত নয়। সভাপতির পদটি একেবারেই আলংকরিক একটি পদ। এটাকে যারা বিতর্কিত করতে চায়, বুঝতে হবে তারা ফেরামের মঙ্গল চান না। তিনি বলেন, গঠনতন্ত্রে সভাপতির দায়িত্ব ও কর্তব্য নির্ধারিণ করে দেয়া আছে। কিন্তু ফোরামের প্রয়োজনে আমাকে অনেক বেশী শ্রম দিতে হচ্ছে। সারথিদের চাঁদা আদায়, অনুদান সংগ্রহ, সারথি সংগ্রহ, তাদের তথ্য সংগ্রহ, ফাইলপত্র সংরক্ষণ, সকল নীতিমালা প্রণয়ন, সভার কার্যবিবরণী তৈরি করা, গঠনতন্ত্র তৈরি করা, গীতা শিক্ষা সংক্রান্ত সকল কার্যক্রম পরিচালনা করা থেকে তৃণমূল পর্যায়ে সারথিদের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখাটা একমাত্র সভাপতির কর্ম নয়। কিন্তু এই কর্মগুলো আমাকে করতে হচ্ছে। তিনি প্রশ্ন রাখেন- তাহলে সাধারণ সম্পাদক, সাংগঠনিক সম্পাদক, কোষাধ্যক্ষ পদের দায়িত্ব কি? তিনি সভাপতির উপর চাপ প্রয়োগ করে সুবিধা আদায় থেকে বিরত থাকার জন্য সকল সারথিকে অনুরোধ জানান। তিনি আশা প্রকাশ করেন আজকের সিদ্ধান্তের পর থেকে ফোরামের কর্মকাণ্ড গঠনতন্ত্র অনুসরণ করে এবং নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতিতে পরিশীলিতভাবে অগ্রসর হবে। এ প্রসংগে আজকের সম্মানিত সারথিদের বক্তব্যের কিছু উত্তর প্রদান করেন। তিনি শ্রী অজিত শীলের প্রশ্নের জবাবে বলেন যে, কেন্দ্রীয় কমিটি যখন গঠন করা হয়, তখন কোন সিনিয়র সভাপতি পদ ছিলো না। পরবর্তীতে নীতিনির্ধারণী সারথিদের সাথে আলোচনা করে এই পদে শ্রী অভি দত্তকে সিনিয়র সভাপতি পদে নির্বাচিত করা হয়। এই নিয়ে ভুল বুঝা বা মনে কষ্ট পাবার কোন অবকাশ নাই। এছাড়া গঠনতন্ত্রে যেসব অসংগতির কথা শ্রী অজিত শীল বলেছেন এ প্রসংগে তিনি বলেন যে, গঠনতন্ত্র তিনি তাঁর দীর্ঘদিনের চাকরি জীবনের অভিজ্ঞতার আলোকে রচনা করেছেন। পরবর্তীতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন অধ্যাপক এবং ঢাকা মহানগর কমিটির সম্মানিত উপদেষ্টা অধ্যাপক হীরেন্দ্র নাথ বিশ্বাসকে দিয়ে সংশোধন, সংযোজন এবং বিয়োজন করে গঠনতন্ত্রের চ’ড়ান্ত রূপ দেয়া হয়। তবু গঠনতন্ত্র যেহেতু কোন ধর্মগন্থ নয়, সময়ের প্রয়োজনে সংশোধন এবং সংযোজন করা যেতেই পারে। এব্যাপারে শ্রী অজিত শীলকে লিখিতভাবে তার পরামর্শগুলো দেবার জন্য তিনি অনুরোধ জানান। প্রয়োজনে ভবিষ্যতে বর্তমান যে স্টিয়ারিং কমিটি গঠন করা হয়েছে তারা বিষয়গুলো বিবেচনা করবেন। তিনি শ্রী অজিত শীলের আরেক প্রশ্নের জবাবে বলেন যে, বর্তমানে দেশে কেন্দ্রীয় কমিটি ছাড়া শারদাঞ্জলি ফোরামের ৩টি মহানগর কমিটি, ১টি জেলা কমিটি এবং ৬টি আহ্বায়ক কাজ করছে। বিদেশে কুয়েতে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং আবুধাবীতে একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। তিনি শ্রীমতি অশ্রু চৌধুরী বক্তব্যেও জবাবে বলেন যে, আমি সত্যিই নরম মনের মানুষ। এই জন্য তিনি স্রস্টাকে শতকোটি প্রনাম জানান। কোন সংগঠনের নেতৃত্ব দিতে হলে অনেক ধৈর্য্যশীল হতে হয়, হৃদয়ের সুকুমারবৃত্তিগুলোকে পরিচর্যা করতে হয়, সারথিদের ভালোবাসা দিতে হয়, এটা না-থাকলে নেতৃত্ব দেয়া খুবই কঠিন। তবে তিনি বলেন যে, ফোরামের অগ্রগতির স্বার্থে তিনি আস্তে আস্তে কিছুটা কঠিন হবেন। শ্রী অজিত রায়ের প্রশ্নের জবাবে বলেন যে, বর্তমানে কেন্দ্রীয় কমিটির প্রতিটি সারথির বিস্তারিত তথ্য কম্পিউটারে সংরক্ষণ করা আছে। শ্রী দীলিপ কুমার রায় কর্তৃক প্রস্তাবিত “সারথি কল্যাণ ফাণ্ড” গঠনের প্রস্তাবকে সমর্থন জানিয়ে বলেন যে, যেহেতু ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় ডোনার ফান্ড গঠন করা হয়েছে, উক্ত ফাণ্ড যখন শক্তিশালী হবে তখন দরিদ্র মেধাবী ছাত্রদের শিক্ষা সহায়তা দেয়া এবং দরিদ্র পরিবারের কেউ অসুস্থ হয়ে তাদের চিকিৎসা সাহায্য দেয়াসহ অন্যান্য মানবিক কর্মকাণ্ডের পরিধি আরো বিস্তৃতি ঘটানো হবে। তবে তিনি “সারথি কল্যাণ ফাণ্ড” গঠনের প্রস্তাব পরবর্তীতে বিবেচনা করার প্রতিশ্র“তি দেন। টিশার্ট তৈরিতে সার্বিক সহযোগিতা দেয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে গীতা ফাণ্ডের জন্য অনুদান সংগ্রহ করা এবং দরিদ্র মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের বিদেশে পড়াশুনা, স্কলারশীপ পাওয়া এবং ভিসা পেতে তাঁর সর্বাÍক সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করায় শ্রী লিটন পালের প্রতি কৃতজ্ঞা প্রকাশ এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। শ্রী রতন পালের গীতার উপকরণ খাতায় শারদাঞ্জলি ফোরামের নিজস্ব মনোগ্রাম সহ “শারদাঞ্জলি গীতা নিকেতন” যুক্ত কভার ছাপানোর ব্যাপারে সমর্থন জানান। সেই সাথে এই খাতে ২৫ হাজার টাকা অনুদান দেবার ঘোষণা দেবার জন্য শ্রী রতন পালকে ধন্যবাদ জানান। এছাড়া গত বছরের মত এবছরও পূজা ম্যাগাজিন ছাপানোয় দিকদর্শন প্রকাশনা থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা পাবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। তিনি বক্তৃতার শেষ পর্যায়ে ঢাকা এবং তার আশপাশে থাকা সারথিগণ, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, রংপুর, নারায়ণগঞ্জ, সাতক্ষীরা এবং মানিকগঞ্জ থেকে আগত সারথিদে জরুরি সভায় উপস্থিত থেকে সুচিন্তিত মতামত প্রকাশ করায় ও সভাকে সাফল্যমন্ডিত করার জন্য সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করার জন্য অশেষ ধন্যবাদ জানিয়ে আজকের জরুরী সভার সমাপ্তি ঘোষণা করেন।

(বাবুল চন্দ্র পাল)
সভাপতি

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *